রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ১৮ দিন পর পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে পুরোদমে চিকিৎসাসেবা শুরু হয়, যা রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে স্বস্তির অনুভূতি ফিরিয়ে এনেছে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার (২৭ মে), ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে’ আহত কয়েকজনের সঙ্গে চক্ষু ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ও নার্সদের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে। এতে হাসপাতালের অন্তত ১০ জন স্টাফ আহত হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন বুধবার (২৮ মে) থেকে হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়ে। জরুরি বিভাগও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান। ভর্তি থাকা রোগীরাও পড়ে যান চরম ভোগান্তিতে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালায় কর্তৃপক্ষ। ধাপে ধাপে মঙ্গলবার (৩ জুন) জরুরি বিভাগ এবং বুধবার (১১ জুন) বহির্বিভাগ চালু করা হলেও পূর্ণ সেবায় ফিরে আসে হাসপাতাল শনিবার (১৪ জুন)।
প্রতিষ্ঠানটিতে সকাল থেকেই চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের উপস্থিতিতে হাসপাতাল ভবন চঞ্চল হয়ে ওঠে। বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে রোগী দেখায় ব্যস্ত দেখা যায় চিকিৎসকদের। রোগীদের মধ্যে ছিল স্বস্তি ও তৃপ্তি।
চিকিৎসক ও আহতদের চিকিৎসা সমন্বয়ক এবং সহকারী অধ্যাপক ডা. যাকিয়া সুলতানা নীলা জানান, “সব বিভাগেই সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা আগের মতোই দায়িত্ব পালন করছেন। রোগী-চিকিৎসক আস্থার সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে আমরা কাজ করছি।”
চিকিৎসা নিতে আসা অনেকেই জানান, তারা আগের চেয়ে ভালো সেবা পাচ্ছেন। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মো. কায়সার আলী বলেন, “গত সপ্তাহে এসে ফিরে গিয়েছিলাম। এবার এসে চিকিৎসা পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।”
নোয়াখালী থেকে আসা এক রোগীর স্বজন বলেন, “চোখের অপারেশন করাতে এক মাস ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এখন সব চালু হয়েছে শুনে শান্তি লাগছে।”
১৮ দিন ধরে বন্ধ থাকায় দেশের অন্যতম চক্ষু চিকিৎসাকেন্দ্রের অচলাবস্থায় রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। এখন পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা চালু হওয়ায় রোগী-স্বজন, চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বস্তি ও স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে।