নাম খিরোদ মন্ডল। বয়স প্রায় ৬২ বছর। কিন্তু জন্ম থেকে খিরোদ মন্ডল প্রতিবন্ধি। তার দু পা পঙ্গু । হাটতে পারে না। হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয় খিরোদ মন্ডলের । প্রতিবন্ধি খিরোদ মন্ডল দু পায়ে হাটতে না পারলে ও সংসারের হাল ছাড়েনি তিনি। শনিবার সকালে সংবাদের খোজে মটর সাইকেল নিযে ঘুরতেই চোখে পড়ে নৌকায় যার বসাবস সেই খিরোদ মন্ডলের সঙ্গে।।
খিরোদ মন্ডলের কাছে যেতেই সাংবাদিক দেখে তার দু চোখে অশ্রু ভেজা সিক্ত নয়নে বলেন কেউ এই ২৫ বছর আমার খোজ নেয়নি। আপনি আমার খোজ নিতে এই নৌকায় এসেছেন।
যা হোক কথা হল প্রতিবন্ধি নৌকায় বসাবস করা সেই খিরোদ মন্ডলের সঙ্গে । তিনি জানান সংসারে আমার পিতা নাই। প্রায় ১৪/১৫ বছর আগে মারা গেছে। মা আছে আর একটি ছোট বোন রয়েছে সেও প্রতিবন্ধি।
তিনি আরো জানান আমি প্রতিবন্ধি হয়ে ও হাল ছাড়েনি। এই রাস্তার ধারে প্রায় ১ একর সরকারী খাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করি। এই মাছ চাষ করে সরকারের কিছু টাকা দিয়ে থাকি অন্য দিকে আমাদের গ্রামে মন্দিরে কিছু টাকা দিয়ে থাকি। আর বাকী টাকা দিয়ে আমি ও আমার সংসারের হাল ধরে রেখেছি।
নৌকায় থাকেন কেন জানতে চাইলে তিনি জানান আমি তো পঙ্গু । হাটতে পারি না। তাই দীর্ঘ ২৫ বঁছর যাবত এই নৌকার মধ্যে বসাবস করি। রাতে আমার ঘেরের ভেড়িতে ছোট একটা ঘর আছে সেখানে থাকি। বিয়ে করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান আমার দু পা থাকতে ও নেই। আমাকে কে মেয়ে দিবে। অন্য দিকে প্রতিবন্ধি ভাতা পান কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান এই প্রতিবন্ধি ভাতা ছাড়া সরকার আমাকে আর কিছুই সাহায্য করে না। খিরোদ মন্ডল সাতক্ষীরা তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাদরা গ্রামের মৃত জয়দেব মন্ডলের পুত্র।
খিরোদ মন্ডল আরো জানান আমি এর আগে নৌকায় করে মাছ শিকার করে জীবনের চাকা সচল রাখতাম। অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গনেষ দেবনাথ জানান খিরোদ মন্ডল কে চিনি। সে খুব ভাল মানুষ। সে প্রতিবন্ধি হয়ে ও বসে থাকে না। মাদরা এলাকায় একটি খাল ইজারা নিয়ে সেখানে মাছ চাষ করে খিরোদ মন্ডল । আমি যতটুকু পারি তার পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করি। সব চেয়ে বড় কথা খিরোদ মন্ডল প্রতিবন্ধি হয়ে ও মাছ চাষ করে জীবনের চাকা সচল করার জন্য চেষ্টা করছে।