ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ফের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনাটি ঘটে রোববার (১৫ জুন) সকালে রুদ্রপ্রয়াগ জেলার গৌরিকুণ্ড এবং ত্রিজুগিনারায়ণের মধ্যবর্তী কেদারঘাটিতে। আর্যন এভিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের একটি হেলিকপ্টার ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায় এবং এতে কমপক্ষে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই।
উত্তরাখণ্ড সিভিল অ্যাভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ইউকাডা) জানায়, হেলিকপ্টারটি সকাল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
রুদ্রপ্রয়াগ জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নন্দন সিং রাওয়াত গণমাধ্যমকে জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গৌরিকুণ্ডের উপরের বনাঞ্চলে, যেখানে প্রচণ্ড কুয়াশা ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছিল। গড়ওয়াল রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল রাজীব স্বরূপ বলেন, দুর্ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। পুলিশ এবং রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)-এর দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স'-এ (পূর্বতন টুইটার) শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। তিনি লেখেন, “রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার অত্যন্ত দুঃখজনক খবর পাওয়া গেছে। এসডিআরএফ, স্থানীয় প্রশাসন এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজে নিয়োজিত আছে। আমি বাবা কেদারের শরণাপন্ন হয়ে সকল যাত্রীর নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছি।”
এর আগে চলতি বছরের ৮ মে উত্তরকাশী জেলায় গঙ্গোত্রি ধামে যাওয়ার পথে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জন প্রাণ হারান। এমনকি ৭ জুন কেদারনাথে যাওয়ার আরেকটি হেলিকপ্টার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাস্তায় জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। সেখানে পাইলট আহত হলেও পাঁচজন যাত্রী অক্ষত ছিলেন।
ক্রমাগত দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে হেলিকপ্টার চলাচলে কড়াকড়ি নির্দেশ জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ধামি। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যে হেলিকপ্টার চলাচলের জন্য একটি কঠোর স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করা হবে। প্রতিটি উড্ডয়নের আগে আবহাওয়ার অবস্থা নির্ভরযোগ্যভাবে যাচাই এবং বিমানের প্রযুক্তিগত পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর (সিএমও) থেকে জানানো হয়েছে, এই এসওপি প্রণয়নের জন্য প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা হেলিকপ্টার পরিষেবা যেন সম্পূর্ণ নিরাপদ, স্বচ্ছ এবং প্রযোজ্য সকল মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করবে।