মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন নির্ধারিত সময়ের আগেই ত্যাগ করেছেন। সোমবার (১৬ জুন) তিনি ইরানের নাগরিকদের তেহরান "অবিলম্বে খালি করার" হুঁশিয়ারি দেন। রয়টার্স ও সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনে ফিরেছেন।
সোমবার (১৬ জুন) হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক্স (টুইটার)-এ জানান, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় ট্রাম্প জি-৭ সম্মেলনের শেষ দিনের কর্মসূচি বাদ দিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে রাতের খাবারের পরই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সম্ভাব্য সমাধান ও যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা ত্বরান্বিত করতে চাইছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, ট্রাম্পের তড়িঘড়ি ফেরাটা ইতিবাচক, কারণ তার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প জি-৭ নেতাদের প্রস্তাবিত যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, যা ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।
নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ফোরদোয় মার্কিন "বাঙ্কার-বাস্টার" বোমা ব্যবহারের কথা ভাবছেন। তবে এই প্রতিবেদনে কোনো নির্দিষ্ট সূত্রের উল্লেখ নেই। এদিকে, ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে ইরানিদের উদ্দেশে লেখেন, “তেহরান এখনই খালি করো! আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে প্রাণহানি এড়ানো যেত। ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না।”
সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার ভূমিকা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়। ট্রাম্প দাবি করেন, ২০১৪ সালে রাশিয়াকে জি-৮ থেকে বাদ দেওয়া ভুল ছিল। তিনি জি-৭-এ রাশিয়া ও চীনকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন, যা অন্যান্য নেতাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে। এছাড়া, ব্রিটেনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেন ট্রাম্প, যাতে যুক্তরাজ্যের অটো ও অ্যারোস্পেস শিল্পে আমদানি শুল্ক হ্রাস পায়।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ফিরে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত কূটনৈতিকভাবে নিষ্পত্তি হবে নাকি সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়বে—সেটিই এখন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মূল প্রশ্ন।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস।