জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ: বেরিয়ে গেল সিপিবি, গণফোরাম

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৮ জুন, ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ: বেরিয়ে গেল সিপিবি, গণফোরাম

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের তৃতীয় দিনে অংশ নেওয়া কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। বক্তব্য দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে আলোচনার মাঝপথে সভাস্থল ত্যাগ করেন সিপিবি, গণফোরাম এবং এলডিপির নেতারা। পরে কমিশনের সদস্যদের হস্তক্ষেপে তাদের কেউ কেউ ফের সংলাপে ফিরে আসেন।

সকাল সাড়ে ১১টায় এই সংলাপ শুরু হলেও মূল বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে। তখন জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে একাধিক ব্যক্তি বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলেও সিপিবি ও গণফোরামের নেতাদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উষ্মা প্রকাশ করে সংলাপ থেকে বেরিয়ে যান।

প্রিন্স অভিযোগ করেন, “জামায়াতের তিনজনকে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হলেও আমাদের একজন বলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।” গণফোরামের মিজানুর রহমান বলেন, “ঐকমত্য কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এই অবস্থায় সংলাপ চলতে পারে না।” তবে পরে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ফের সভায় ফিরিয়ে আনেন।

একই সময় বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমও সংলাপ ত্যাগ করেন। যদিও তিনি জানান, এটি ওয়াকআউট ছিল না, বরং তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বের হয়ে যান। তবে জানান, “জামায়াতের প্রতিনিধি আমাকে বলেছে, আপনি তো ১০ জন মানুষেরও প্রতিনিধি না। এমন কথায় আমরা মর্মাহত হয়েছি।”

এর আগে, ঐকমত্য কমিশনের এই সংলাপে মঙ্গলবার (১৭ জুন) অংশ নেয়নি জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি। পরে দলটি জানায়, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে হওয়া বৈঠকের যৌথ ঘোষণার ‘প্রতিবাদে’ তারা সংলাপে অংশ নেয়নি। একদিন পর সংলাপে ফিরে এসে জামায়াতের নেতারা উষ্ণ অভ্যর্থনা পান। অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা করমর্দন, কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের গ্রহণ করেন।

এই সংলাপের সভাপতি ছিলেন কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

প্রসঙ্গত, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণফোরাম, সিপিবি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্টসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW