বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পূর্ণগঠনে কাজ করছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক সামরিক সচিব, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও রাজশাহী-১ (তানোর- গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী গোদাগাড়ী উপজেলার কৃতিসন্তান মেজর জেনারেল (অব.) মো. শরীফ উদ্দিন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাংগঠনিক কর্মকান্ড গতিশীল করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তবে দল পুনর্গঠনের কাজ করতে গিয়ে তিনি নানান অপপ্রচারের শিকারও হচ্ছেন।
এবিষয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে দলকে গতিশীল করতে আগ্রহী। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন গণ-অভ্যুত্থান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলকে চাঙা ও শক্তিশালী করতেই শরীফ উদ্দিন ভাই পথে প্রান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তারা আরো বলেন, বিশৃঙ্খলা ঠেকানো ও বিতর্কিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএনপি পিছপা হবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে বিএনপি’র ৩১ দফার বার্তাই পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তৃণমুলে।
তানোর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এম এ মালেক মন্ডল ও মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোহিদুল ইসলাম রেজা বলেন, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর মাঝে সর্বাধিক পরিচিত মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন।
তিনি প্রয়াত সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ ক্যাবিনেট মন্ত্রী ব্যরিস্টার আমিনুল হকের সহোদর ভাই। তাঁর নেতৃত্বে তানোর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ।
তারা জানান, বিএনপি’র এই নীতি নির্ধারক শরীফ উদ্দিনের জন্ম রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী পৌরসভার কেল্লা বাড়ইপাড়া গ্রামে। থাকেন রাজধানী ঢাকার বনানীতে। যার বাড়ি নম্বর-১০৯, ২/এ, ডিও এইচ এস মসজিদ রোড। তবে, প্রতি সপ্তায় তিনি গ্রামের বাড়িতে এসে তানোর-গোদাগাড়ীর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও ভোটারদের খোঁজ-খবর নেন বলে জানান মালেক ও রেজা।
অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন জানান, লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁকে ১৯৬৯ সালে ২০/৭ ব্যাচে রাজশাহীর আইউব ক্যাডেট কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৯৭৩ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীন হন। পরবর্তীতে কিছু দিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি।
এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ১৯৭৬ সালে সেনাবাহিনীতে জয়েন এবং সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদে ১৯৭৭ সালে চাকুরি জীবন শুরু করেন। পরে তিনি চাকুরি কালিন সময়ে বিএসএস ও এমএসএম ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি একজন পদাতিক বাহিনী অফিসার। ১৯৮৪ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর চাকুরির বয়স আরও ৮ বছর থাকলেও রাজনৈতিক কারণে ২০০৮ সালে মেজর জেনারেল পদ থেকে তাঁকে চাকুরি হতে বাধ্যতামুলক অব্যাহতি দেয়া হয়।
এরআগে ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গঠিত পিজিআর এ (চৎবংরফবহঃ এঁধৎফ জধমরসবহঃ) যোগ দেন। জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর বিএমএতে প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে ৩ বছর চাকুরি করেন। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরবর্তীতে টঘঙঝঙগ-ওও (সোমালিয়ায়) ১৯৯৩ সালে এবং টঘঅগঝওখ (সিয়েরালিয়ন) জাতিসংঘ মিশনে দুবার কাজ করেন।
২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সহকারী/উপ/সামরিক সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও ২০০৫ সালে ঢাকাস্থ ৪৬ তম স্বতন্ত্র ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে যোগদান এবং পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে যশোর (৫৫ তম পদাতিক) ডিভিশনের দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে চায়নাতে অজগণ ঈঙগগঅঘউ ঈঙখখঊএঊ (নানজিং) এক বছরের জয়েন্ট টেকটিফস কামান্ড কোর্সে ঊীবষবহ গ্রেড পেয়ে সফলতার সাথে উর্ত্তীন হন। তিনি চাকুরি জীবনে সফলতার জন্য প্রায় ১৫টি পদক পান। এরমধ্যে অন্যতম স্বাধীনতা পদক, জ্যোষ্ঠতা পদক, রক্তদাতা পদক ও জাতিসংঘের ম্যাডেল অনুরুপ বহুপদক। তিনি আশাবাদী তাঁকে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে।
তিনি এই আসনে মনোনয়ন পেলে আসনটি উদ্ধার করার জন্য কাজ করবেন। এজন্য মানুষের মন জয়করে ভোটার ও নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দলকে আসনটি উপহার দেবেন বলে জানান।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা আট ভাই ও এক বোন। তিনি ভাইদের মধ্যে ৭ তম। ১৯৫৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারী পিতার বাড়ি গোদাগাড়ীর কেল্লাবারুই পাড়া গ্রামে জন্ম হয়। তাঁদের আট ভাই বোন শিক্ষা জীবনে দেশে-বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশ গড়ার কাজে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। এজন্য তাঁর মা আনোয়ারা খাতুনকে সরকার রত্নগর্ভা হিসেবে পদক দেন। বাবা মরহুম স্কুল শিক্ষক ফহীম উদ্দীন বিশ্বাস। তাঁর স্ত্রী হেলালুন নাহার (জলি) এমএ ডিগ্রী ধারী। পরিবারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে নিউ ইয়র্ক বিজনেস কলেজ (টঝঅ) থেকে ইইঅ অর্জন প্রাপ্ত। ছোট ছেলে Economics এমএ Virginia Tech (USA) থেকে। মেয়ে HARVARD
UNIVERSITY থেকে MA (BOSTON-USA) সদ্য পাশ করেছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এহসানুল কবির টুকু বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. শরীফ উদ্দিন বিএনপিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সর্বাত্মকভাবে কাজ করছেন। তার নেতৃত্বেই আজ প্রবীণ ও তরুণেরা এক হয়ে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য জীবনকে বাজী রেখে কাজ করে যাচ্ছেন।
অথচ একটি স্বার্থান্বেষী মহল অঙ্গসংগঠনের কমিটি প্রসঙ্গে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গ, এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন ছাড়াও প্রচারণায় রয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কেএম জুয়েল, সুপ্রিমকোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সাজেদুর রহমান মার্কনি, জিয়া পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব। তবে, তানোরে বিএনপি থেকে এখন কোন এমপি প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। ই/তা