রাজশাহীর তানোরে প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত অবৈধভাবে পুকুর পুনঃখনন করা হচ্ছে। আর ওই পুকুরের মাটি ট্রাক্টর দিয়ে অন্যত্র বহন করায় সরকারি পাঁকা রাস্তা নস্ট হচ্ছে। সম্প্রতি চলতি সপ্তা ধরে উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এনিয়ে স্থানীয়রা ভূমি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করলেও ব্যবস্থায় উদাসিন কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সরনজাই বাজারে যাওয়ার আগেই মুল রাস্তার দক্ষিণে সরনজাই কাঁচারিপাড়া। গ্রামের মাঝে পাঁকা রাস্তা ঘেঁষে পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ দিকে গাছকাটা আছে এবং ভেকু মেশিন দ্বারা মাটিকাটা চলছিল।
মাটি বহনকারী দুটি ট্রাক্টর রাস্তায় দাঁড় করানো আছে। ট্রাক্টরে করে পুকুরের কাঁদামাটি বহন করার সময় রাস্তায় ব্যাপক হারে মাটি পড়ে। এসময় বর্ষা নেমে আসলে রাস্তায় পড়া ওই মাটিতে কাঁদা জমে। কোদাল দিয়ে সেই কাঁদামাটি পরিস্কার করছে। এভাবে পরিস্কার করার কারণে রাস্তার খোয়া পাথর উঠে যাচ্ছে। এসময় শুরু হয় ভারি বৃষ্টি। কয়েকজন ব্যক্তি জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে খালি পায়ে হেটে যাচ্ছে। সেখানে গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি জানান, এখন বর্ষা মৌসুম। এসময় পুকুর খনন করে মাটি বহন করা সঠিক কাজ নয়। রাস্তার যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে করে চলাচল করায় কষ্টকর ব্যাপার। এখানেই শেষ নয়, মাটি বহনের কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। এসময় গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে ট্রাক্টর থামিয়ে সটকে পড়ে চালক। এতে রাস্তায় স্বাভাবিক চলাফেরায় বিপদে পড়েছে মানুষ।
এবিষয়ে বেশকিছু বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসি বলেন, পুকুর খননকারী মুকুল একজন কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ী। তারা গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি।
তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাই না। এজন্য কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে তারা দেদারসে কাঁদামাটি বহন করে পাঁকারাস্তা চরম ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এসব কাঁদামাটি কোনভাবেই রাস্তা থেকে সরানো সম্ভব নয়। বৃষ্টি হওয়ার কারণে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে পুরো রাস্তা।
এসময় এক মোটরসাইকেল চালক জানান, সকালে দেখলাম রাস্তায় কোন মাটি ছিল না। কিন্তু দুপুরের দিকে আর মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আলুর জমিতে চলছে পুরোদমে ধানকাটা মাড়াই। রাস্তায় কাঁদামাটি পড়ে থাকার কারণে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার রফিকুল ইসলামকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, ঘটনাস্থল দেখে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।
এনিয়ে পুকুর মালিক মুকুলের মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। পরে উপজেলার সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খানের মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে স্থানীয় তানোর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) তানভীর আহম্মেদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভেকু মেশিন বন্ধ করা হয়েছে। পরে এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান জানান, বিষয়টি অবগত হয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো বলে জানান ইউএনও। ই/তা