সরাইলে কচুক্ষেতে মিলল শিশু রাহিমের লাশ

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : : | প্রকাশ: ২১ জুন, ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
সরাইলে কচুক্ষেতে মিলল শিশু রাহিমের লাশ

দিন মজুর পিতা আসাদ আলী থেকেও দূরে। মাতা থাকেন ঢাকায়। শিশু রাহিম (১০) থাকে নানীর কাছে। অনেকটা ছিন্নছড়া জীবন-যাপন রাহিমের। সরাইল সদরের সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা তারা। বৃহস্পতিবার নানির বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরেনি রাহিম। পরের দিন নানির বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে জাফর খালের কচুক্ষেতে মিলল শিশু রাহিমের লাশ। নাকে মুখে রক্ত। এটা কি খুন নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু? এই প্রশ্ন এখন রাহিমের পরিবার, স্বজনসহ সকলের। পুলিশ বলছেন, ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সরাইল সদরের সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মফিজ আলীর  ছেলে আসাদ আলী। গত প্রায় ১১ বছর আগে একই গ্রামের বন্দের বাড়িতে বিয়ে করেন আসাদ আলী। দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহন করে আব্দুর রাহিম। দিন মজুর পিতা আর গৃহিনী মাতার আদর স্নেহে ভালোই কেটেছে রাহিমের শৈশবের ৮ টি বছর। গত ২ বছর আগে পারিবারিক কলহে আসাদ আলীর দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ ঘটে। দূর্ভাগ্য নেমে আসে শিশু রাহিম ও তার ছোট ভাইয়ের ললাটে। আসাদ আলী আরেকটি বিয়ে করে ছোট ছেলেকে নিয়ে অন্যত্র সংসার করতে থাকেন। আর রাহিমকে সাথে নিয়ে বাবার বাড়ি বন্দেরবাড়িতে চলে যান তার মাতা। মায়ের বিয়ের আগেই মারা গেছেন রাহিমের নানা। তাই সেখানে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগুতে থাকেন রাহিমের এতিম মা। নিজের সন্তান রাহিমের ভবিষ্যতের চিন্তা করে তিনি বিয়েও করেননি। পেটের জন্য সন্তানসহ বেঁচে থাকার তাগিদে গার্মেন্টেস-এ চাকরি নিয়ে ঢাকায় চলে যান রাহিমের মা। তখন থেকে পিতা মাতার আদর স্নেহ বঞ্চিত শিশু রাহিম তার নানীর আদর যত্নেই বড় হতে থাকে। আর্থিক অনটনের কারণে পড়ালেখা ভাগ্যে জুটেনি রাহিমের। নানীর শাসনে বেড়ে উঠা রাহিম বয়স বাড়ার সাথে নিজের মত করে ঘুরেফিরে জীবন-যাপন করতো। গত ১৯ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাহিম নিখোঁজ হয়। আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজেও রাহিমের সন্ধান মিলেনি। পরের দিন শুক্রবার সকালে তার নানীর বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে জাফর খালের কচুক্ষেতে রাহিমের লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ রাহিমের লাশ উদ্ধার ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, আলামতের নমুনা বলছে এটি খুন। শিশু রাহিমের তো কোন শত্রূ নেই। তাকে কে বা কেন খুন করা হয়েছে। আসলে কি এটি খুন? নাকি কোন ভাবে স্বাভাবিক মৃত্যু? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা সরাইলে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল হাসান বলেন, রাহিমের লাশের মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। আমাদের তদন্তও চলছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে