বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের শাস্তি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর নতুনবাজারে দিনভর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)–এর শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২১ জুন) বিকেল ছয়টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিলেও কর্তৃপক্ষকে রাত আটটার মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। দাবি পূরণ না হলে রোববার (২২ জুন) সকাল ১০টা থেকে ফের সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ইউআইইউ–এর প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উপেক্ষা করছে। এ নিয়ে তারা ১৩ দফা দাবি জানালেও প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জেরে ২ জুন ৪১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ীভাবে এবং ১৬ জনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে, একজনকে সতর্ক করা হয়েছে।
এর আগেও ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের প্রেক্ষিতে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি ক্লাস এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানায়।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সড়ক অবরোধ শুরু করলে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ সময় কিছু শিক্ষার্থী আহত হন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল বৈঠকে বসে। উপাচার্য ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
শুধু ইউআইইউ নয়, সারাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। তাঁরা জানান, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা না হলে থানাও ঘেরাও করা হবে। এ ছাড়াও চলমান থাকবে বাংলা ব্লকেড ও আমরণ অনশন।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি:
১. বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. বহিষ্কারের সঙ্গে জড়িত ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩. প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৫. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল করতে হবে।