মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা। এমন উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে রোববার (২২ জুন) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ সম্মেলনে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে এবং সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের কথাও জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই সংকট আরও বিস্তৃত হলে গোটা বিশ্বই চরম ঝুঁকিতে পড়বে।” তিনি জানান, ইরানে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করে।
বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, এবং এবারও একই বার্তা দিয়েছে। একইসাথে বাংলাদেশ জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ সংকট নিরসনে সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানে অবস্থানরত ৯২ জন বাংলাদেশি নাগরিকের একটি তালিকা ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে, যাদের ধাপে ধাপে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। প্রথম দফায় ২৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে আগামী সপ্তাহে।
এ লক্ষ্যে তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস পাকিস্তান সরকারের কাছে ওই তালিকা হস্তান্তর করেছে। পাকিস্তান তাদের সীমান্ত দিয়ে এসব নাগরিকের প্রবেশে সম্মতি দিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশিরা ইরান থেকে স্থলপথে পাকিস্তানে, সেখান থেকে করাচি বা আশপাশের বিমানবন্দর হয়ে দুবাই, এবং পরে বাংলাদেশে ফিরবেন।
ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ২৫ কিংবা ২৬ জুন নাগরিকদের ইসলামাবাদে আনা হতে পারে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তারা বাংলাদেশে ফিরবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা ইরান থেকে ফিরতে আগ্রহী, তাদের তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হটলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ও ইরানে অবস্থানরত স্বজনদের জন্য সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে:
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, গঠনমূলক আলোচনা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতির ভিত্তিতে একটি টেকসই শান্তি সম্ভব।” সব পক্ষকে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যা উত্তেজনা বাড়াতে পারে।