‘আমি খুবই ঝামেলার মধ্যে আছি’— এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৬ জুন, ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
‘আমি খুবই ঝামেলার মধ্যে আছি’— এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঘিরে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজস্ব আদায় বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি আজ খুবই ঝামেলার মধ্যে আছি। আমাদের ওপর যে সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেক দ্বিমত রয়েছে।”

চলতি বছরের মে মাসে এনবিআরকে দুটি ভাগে—রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন বিভাগে বিভক্ত করে একটি অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এরপর থেকেই এনবিআরের একাংশের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ পদক্ষেপ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এই আন্দোলন চলতে থাকায় সরকার পিছু হটে এবং আলোচনার আশ্বাস দেয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে তাকে “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করেন।

চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, “আন্দোলনের কারণে কিছুটা তো হ্যাম্পার হচ্ছেই। জুন মাসের আর দু’দিন বাকি, রাজস্ব আদায়ের প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কর আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই দেশের স্বার্থে কাজ করি। সংস্কার হোক, আইন হোক, আন্দোলন হোক—সবই যেন দেশ ও জনগণের কল্যাণে হয়।”

একইদিন বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিআর ক্যাডারের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকের কথা থাকলেও, আন্দোলনরত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ বৈঠকে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। তাদের অভিযোগ—এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং আগের আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলি, কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়া এবং সমন্বয় কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি রাখা হয়নি।

সংগঠনের সভাপতি অতিরিক্ত কর কমিশনার হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদারকে রাজস্ব ভবনে প্রবেশে বাধা দেওয়া হলে তিনি মূল ফটকে অবস্থান নেন। এনবিআর ভবন ঘিরে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া অবস্থানও দেখা যায়।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে “আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী” এবং “রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টাকারী” আখ্যা দিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—চেয়ারম্যানকে যদি শুক্রবারের মধ্যে অপসারণ করা না হয়, তবে শনিবার (২৮ জুন) থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাটের সব দপ্তরে লাগাতার 'কমপ্লিট শাটডাউন' শুরু হবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবাকে এ কর্মসূচির বাইরে রাখা হবে।

চেয়ারম্যান জানান, অনলাইন রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা এক বছরে ৫ লাখ থেকে বেড়ে ১৭ লাখে পৌঁছেছে। তিনি আরও বলেন, “এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় ট্যারিফ কমানো এবং অটোমেশনের মাধ্যমে কর প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও জনবান্ধব করা হবে।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে