বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ৩টি ডাইভিং বোট পানকৌড়ি, গাংচিল এবং মাছরাঙ্গা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন-২০২৫) খুলনা নেভাল বার্থে আয়োজিত কমিশনিং অনুষ্ঠানে মাননীয় নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বোটসমূহের অধিনায়কগণের নিকট কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। এ সময় সামরিক ও অসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব সক্ষমতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ ও সরঞ্জামাদি তৈরির মাধ্যমে নৌবহরকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুন ২০২১ খুলনা শিপইয়ার্ডে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে দেশীয় প্রযুক্তিতে ০৩টি ডাইভিং বোট নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মাণ কাজ ও প্রয়োজনীয় টেস্ট ট্রায়াল শেষে গত ৬ মে ২০২৫ ডাইভিং বোটসমূহ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নব সংযোজিত ডাইভিং বোটগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৮.৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ মিটার। বোটগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। ডুবুরি কার্যক্রমের আধুনিকায়নে বোটত্রয়ে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন জবঃৎধপঃধনষব গধংঃ, খধঁহপয ধহফ জবপড়াবৎু ঝুংঃবস, উবপশ উবপড়সঢ়ৎবংংরড়হ ঈযধসনবৎ। ডাইভিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত আধুনিক সরঞ্জাম ও সেন্সরে সুসজ্জিত এই বোটগুলোর মাধ্যমে নৌবাহিনীর ডুবুরিগণ আরও কার্যকর ও দক্ষতার সাথে দায়ত্বপালনে সক্ষম হবে। এছাড়াও প্রতিটি বোটে রয়েছে ১২.৭ মি.মি. হেভি মেশিন গান, উন্নত সার্ভেইল্যান্স র্যাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার এবং আধুনিক কন্ট্রোল সিস্টেম।
কমিশনকৃত ডাইভিং বোটসমূহ শান্তিকালীন সময়ে সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রদানসহ ডাইভিং অপারেশন, ঝবধৎপয ধহফ জবংপঁব বা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, স্যালভেজ অপারেশন, দুর্যোগ ও ত্রাণ তৎপরতায় অংশগ্রহণ, সমুদ্র এলাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন কনস্টাবুলারি দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উলেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পরিচালিত অপারেশ জ্যাকপটের গৌরবজনক সাফল্যে ডুবুরিদের দুসাহসী অবদান অনস্বীকার্য। সেই সাথে যুদ্ধ পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম বন্দর ও কর্ণফুলী নদীর ফেয়ারওয়ে এলাকায় ডুবে যাওয়া জাহাজ ও মাইন অপসারণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক পুর্নগঠনে ডুবুরিগণ ও ডাইভিং বোট অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।