পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলার প্রধান আসামি প্রবাসী ইউনুস আলী শেখকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে র্যাব-২ এর একটি বিশেষ দল ঢাকার দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর জয়নাল মার্কেট সংলগ্ন হাজী সবুর খান রোডের ২২ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইউনুস শেখকে আটক করে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ইউনুস শেখ বিদেশ পালানোর চেষ্টায় ছিলেন। তার নামে একটি এয়ার টিকিট পাওয়া গেছে, যেখানে উল্লেখ রয়েছে-তিনি ২ জুলাই কুয়েত হয়ে সৌদি আরবের কাসিম যাওয়ার জন্য জাজিরা এয়ারওয়েজে ফ্লাইট বুক করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের পরপরই তিনি দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার ইউনুস শেখ পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর বলেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা।
র্যাব রাতেই তাকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে। পরে মঙ্গলবার সকালে ইন্দুরকানী থানায় নিয়ে আসেন এসআই সাখাওয়াত হোসেন, এএসআই আনোয়ার হোসেন এবং সঙ্গীয় ফোর্স মো. মামুন হোসেন ও মো. মশিউর রহমান।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মারুফ হোসেন জানান, "গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।"
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন রাত ১১টার দিকে চন্ডিপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম (৫০) ও তার ভাবী মুকুলী বেগম (৫৫) বাড়ির পাশের পুকুরঘাটে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় নিহত হন। একই ঘটনায় শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগম গুরুতর আহত হন।
ঘটনার পরদিন শহিদুলের বড় ভাই মর্তুজা হাওলাদার বাদী হয়ে ইন্দুরকানী থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত শহিদুল ইসলাম পরপর তিনবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি ইন্দুরকানী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন। তার ভাই মনিরুজ্জামান সেলিম ইন্দুরকানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিলুপ্ত জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
স্থানীয়দের দাবি, ইউনুস শেখ তার স্ত্রীর সঙ্গে শহিদুল ইসলামের পরকীয়ার সন্দেহে ক্ষিপ্ত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।