কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক বিবাহ রেজিস্ট্রার (কাজী)র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী হাবিবুল হক খন্দকারের নামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এ অভিযোগ করেছেন প্রতারণার শিকার আবেদ আলী। আবেদ আলী হাসনাবাদ ইউনিয়নের স্কুলেরহাট এলাকার আহাম্মদ আলীর ছেলে।
অভিযোগে জানা যায় প্রায় ৫ বছর আগে হাসনাবাদ ইউনিয়নের স্কুলেরহাট এলাকার আজিবর খন্দকারের ছেলে মুকুল খন্দকার, মকবুল হোসেনের ছেলে আজিনুর রহমানকে স্বাক্ষী রেখে এবং অনেক গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা মোহরানা ধার্য করে ভিতরবন্দ ইউনিয়নের হাজিরমোড় এলাকার আবুল হোসেনের মেয়ে আইরিন খাতুনের সাথে আবেদ আলীর বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন ওই ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকার কোবাদ আলীর ছেলে অভিযুক্ত কাজী হাবিবুল হক খন্দকার।
বেশ সুখে শান্তির বিবাহিত জীবনে তাদের সংসারে ৩ বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। পরে এক সময় তাদের সংসার জীবনে পারিবারিক কলহ শুরু হলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানায় তারা কাজীর নিকট থেকে অর্থের বিনিময়ে মোহরানার টাকার সংখ্যা বাড়িয়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকার স্থলে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার কাবিন নামার নকল নিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর তিনি হতাশ হয়ে পড়েন এবং কাজীর নিকট নকল চাইতে গেলে তিনি ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আবেদ আলী, কাজীকে ১ হাজার ৫০০ প্রদান করলে তিনি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা উল্লেখিত জাল নিকাহনামা প্রদান করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। বিষয়টি জানার পর আবেদ আলী কাজীর নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে জানায় ২০ হাজার টাকা দিলে তিনি আসল নিকাহনামা প্রদান করবেন। পরে মুলামুলির এক পর্যায়ে সবশেষ ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে নিকাহ নামা ফেরত দেয়ার কথা মোবাইল ফোনে জানায় কাজী। যার মোবাইলের সব কথাবার্তার অডিও রেকর্ড আবেদ আলীর নিকট আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। পরে তিনি ১১ হাজার টাকা নিয়ে ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের কাজী অফিসে গেলে ওই কাজী তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাকে মারপিটের হুমকিও প্রদান করেন। বলেন, যাও গিয়ে হাইকোর্টে মামলা করো। আর তোমার কে আছে নিয়ে আসো। আমি এক টাকাও মোহরানা কমিয়ে দেব না।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আবেদ আলী জানায়, কাজী হাবিবুলের কারণে আমার সুখের সংসারে আজ অশান্তি। আমি আমার মাসুম বাচ্চার মুখ দেখতে পারি না। সে প্রতারণা করে আমার নিকাহনামায় দেনমোহরের টাকা বাড়িয়েছে। আর আমার কাছে ১১ হাজার টাকা দাবি করেছে। টাকা দিলে মূল নিকাহনামার নকল দিতে চেয়েও দেয়নি। বরং নকল তুলতে গেলে আমাকে নানাভাবে হুমকী ধামকী দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে একাধিক সূত্রে জানা গেছে ওই কাজী গায়ের জোরে নানা অনিয়ম করে আসছে। কেউ কিছু বললেই ক্ষমতার বড়াই দেখান তিনি। এ বিষয়ে কাজী হাবিবুল হক খন্দকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে নানাভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকী প্রদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কুড়িগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুছ বলেন লিখিত অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।