দিনাজপুরের বিরলের পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজাহার আলী ও তার সন্তানগণ কর্তৃক সমাজ সেবকদের নানা রকমের হয়রানি ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এদের অপকর্মের বিচারের দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে মঙ্গলবার জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পলাশবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আবু সাঈদ মন্ডল, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর ইসলাম, পলাশবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সহ সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাংগঠনিক রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জালাল হোসেন, ইউনিয়ন পরিষদের আবু সালাম মেম্বার, জয়নাল আবেদীন মেম্বার, আইনুল মেম্বার, বাবুল হোসেন মেম্বার, রবিউল ইসলাম মেম্বার, বিজোড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি কাওছার আলী, সাধারণ সম্পাদক রশিদুল ইসলাম, সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, পলাশবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বিজোড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু প্রমূখ।
আব্দুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের প্রায় ১৬ বছর সময় আজাহার আলী ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলা এমনকি হামলা চালিয়ে এলাকার বহু মানুষকে হয়রানি করে নিঃস্ব করে দিয়েছে। যেসকল মানুষ সমাজে বিভিন্ন সেবামুলক কাজ করে আসছে তাদেরকে নানা রকমের অপবাদ দিয়ে ভালো কাজ করা হতে বিরত রাখার অপচেষ্টা করে আসছে। এলাকায় একজনের সাথে আরেক জনের বিরোধ সৃষ্টি করে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সংঘাত সৃষ্টি করে। এমন কোন কাজ নাই যে আজাহার আলী ও তার পরিবারের সদস্যগণ করতে দ্বিধা করেননি। এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহ মাঠের নামে সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সেই অর্থ ব্যয় না করে নিজ পকেটস্থ করেছেন দলীয় প্রভাব বিস্তার করে সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া এই ব্যাক্তি ও তার পরিবার এখনোও সেই আগের মতই অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
আহাজার আলী ও তার ছেলে আল আমিন, আবুল কালাম আজাদ, আরব আলী, আকরাম হোসেনসহ তার ছেলেরা ধাপে ধাপে প্রায় ছয় হতে সাত মে.টন কখনো চাল কখনো গম বরাদ্দ নেয় যা আত্মসাৎ করে তদন্ত করা হলে বেড়িয়ে আসবে।
তার ছেলে আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে এলাকার উন্নয়ন পথে বাঁধা প্রদান করছে এবং রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সাংবাদিক নিয়ে এসে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে চলেছে। যেহেতু সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজি ও হয়রানিমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন আপনাদের মাধমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে তার সাংবাদিকতার পেশা থেকে বহিষ্কার করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। গত ২০১৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ্ব সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাককে নির্বাচনী প্রচারনার জন্য চকেরহাটে একটি স্টেজ তৈরি করা হয়। সেই স্টেজটি আজাহার আলী ও তার ছেলে আল আমিন, আবু কালাম আজাদ, আকরাম হোসেন, আরব আলীসহ আরও ৫০ হতে ১০০ জন মিলে দেশীয় আস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্টেজ ভাংচুর করে এবং ককটেল বিষ্ফোরন করে বিএপনি’র দলীয় লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে। পরে পুলিশ দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ী বাড়ী তল্লাশী চালিয়ে ব্যাপক হয়রানি আজও কেউ ভুলতে পারছেনা। এই আজাহার আলী ও তার ছেলে সন্তানেরা এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি করে অভিযোগ রয়েছে।
গত ঈদুল আযহায় আজাহার আলীর ছেলে নিজের ফেসবুকে স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর সাবেক এমপি ও সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর ছবি ও নিজ নাম ব্যবহার করে ঈদের শুভেচ্ছা পোস্ট করলে ছাত্র-জনতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজাহার আলীর ছেলেকে পুলিশ আটক করে জুলাই-আগস্টের বিপ্লব বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় আদালতে সোপর্দ করে। এখন গ্রামের নিরীহ ব্যক্তিবর্গসহ সমাজ সেবকদের চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন মাধ্যমে হয়রানিসহ অপপ্রচার করায় গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আজাহার আলীর বাবা আফাজ উদ্দীন ধর্ষনকারী রাজাকার ছিলেন যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে। মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর কেটে গেলেও আজও তার বিচার হয়নি। কিন্তু আজও তারা দেশবিরোধী কাজ চালিয়ে আসছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে আজাহার আলী ও তার ছেলে মোঃ আবর আলী, মোঃ আকরাম হোসেন, মোঃ আলামিন হোসেন, মোঃ আবুল কালাম আজাদসহ এই ষড়যন্ত্রমূলক কাজের জন্য বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।