শ্রীপুরের অবৈধ সিসা কারখানা বন্ধে পদক্ষেপ নিন

সম্পাদকীয়
| আপডেট: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৯ এএম | প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:৩৩ এএম
শ্রীপুরের অবৈধ সিসা কারখানা বন্ধে পদক্ষেপ নিন

শ্রীপুরে বনের ভেতরে একটি অবৈধ সিসা তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। পুরোনো ব্যাটারি পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে সিসা। তাতে করে ক্ষতিকারক বিষাক্ত রসায়নিক পদার্থ বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের মানুষ। জীববৈচিত্র্যের ওপর পড়ছে এর প্রভাব। এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। বৈধ কারখানাগুলো পরিবেশ আইন মানছে কি না, তা নিয়মিত তদারকি করা হয় না। অবৈধ কারখানাগুলোও বন্ধ হয় না। একের পর এক অভিযান চালানোর পরও তেমন একটি সিসা কারখানা শ্রীপুরের জনজীবন ও পরিবেশকে বিনষ্ট করে ফেলেছে। ঢাকার অদূরে শিল্পনগর গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে কারখানাটির অবস্থান, যেটির নাম ডেলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড। গ্রামে জমি ভাড়া নিয়ে ২০১৫ সালের দিকে একটি চীনা কোম্পানি এই কারখানা করে। ২০২০ সালের দিকে কারখানার ধোঁয়া, বর্জ্য ও পানির ক্ষতিকর প্রভাব গ্রামবাসী পেতে শুরু করে, তখন থেকে গাছের পাতা মরে যাওয়া শুরু হয়। জমির ঘাস খেয়ে পেট ফুলে মারা যায় অনেক গেরস্তের গরু-ছাগল। কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের গাছে ফল ধরা কমতে থাকে। এলাকায় শ্বাসকষ্টের রোগী বেড়ে যায়। পরে কারখানা বন্ধ করতে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। দুবার কারখানাটি সিলগালা করে পুলিশ প্রশাসন; কিন্তু অদৃশ্য কারণে কারখানাটি আবার চালু হয়। পুরাতন ব্যাটারির এসিড ও নির্গত রাসায়নিক জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করার সময় বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আশপাশে থাকা মানুষের শরীরে মিশে যাচ্ছে। এর ফলে মানসিক বিকৃতি, রক্তশূন্যতা ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। স্থানীয়রা জানান, পুরাতন ব্যাটারির এসিডের প্রচুর গন্ধ ও কারখানা থেকে নির্গত ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বাতাসের সঙ্গে আশপাশে ছড়িয়ে জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কারখানায় দিনে এসিড ও রাতে এসিডযুক্ত ব্যাটারি পোড়ানো কালোধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে ঝাঁঝালো গন্ধ এলাকাবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দুর্গন্ধের কারণে কারখানা থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে সড়কে চলাচল করতে পথচারীদের দম বন্ধ হয়ে আসে। এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে দম বন্ধ হয়ে যায়। জনজীবন ও পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে দেওয়া এমন কারখানা কোনোভাবেই থাকতে পারে না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।