দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলতি বছরও জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এডিস মশাবাহিত এই রোগে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৩৫৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১৫০ জন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭৮ জন, সিটি করপোরেশনের বাইরে ঢাকা বিভাগে ৪৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৯ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৩২৯ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৫১ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি আছেন ৯৭৮ জন রোগী।
চলতি বছরের শুরু থেকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৪৫৬ জন। এদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। এ সময়ে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ জন, য deren মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং ২১ জন নারী।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ওই বছর হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন এক হাজার ৭০৫ জন। এর আগের বছর ২০২২ সালে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২৬২ জনের। ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মারা যান ৫৭৫ জন, যা মৃতের হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত এসব তথ্য সংরক্ষণ করছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এডিস মশার বিস্তার ঠেকাতে নগর ও গ্রামাঞ্চলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। না হলে বর্ষাকালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।