জামায়াতের জনসভা: কানায় কানায় পূর্ণ জিলা স্কুল মাঠ

এফএনএস (মমিনুল ইসলাম রিপন; রংপুর) : | প্রকাশ: ৪ জুলাই, ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
জামায়াতের জনসভা: কানায় কানায় পূর্ণ জিলা স্কুল মাঠ

জামায়াতের জনসভায় নেতাকর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। জনসভার মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায়ও মানুষের ঢল নেমেছে। দীর্ঘ ১৭ পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল ৩ টার পরপরই রংপুর জিলা স্কুল মাঠে শুরু হয় জনসভার মূল আনুষ্ঠানিকতা। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে জনসভা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের জুলুম অত্যাচার ও বিধি নিষেধের কারনে দীর্ঘদিন পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভা ঘিরে সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠেই দুটি জামাতের মাধ্যমে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন তারা। 

রংপুরের জনসভায় প্রধান বক্তা থাকবেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। জনসভায় বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। এ ছাড়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন জনসভায়।

এদিকে রংপুর মহানগর ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিভাগীয় এই জনসভার জন্য রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠের ভেতরে প্রবেশের সুবিধার্থে নতুন দুটি প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। কালো পর্দা দিয়ে নারীদের আলাদাভাবে বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। 

জিলা স্কুল মাঠের জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করার পাশাপাশি রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। সেইসঙ্গে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সড়কে সড়কে। জনসভায় মেডিকেল টিম, নিজস্ব ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে সকাল থেকেই।

অন্যদিকে সকাল থেকেই দলে দলে লোকজন জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনের কবলে পড়ে হাজার হাজার মানুষ গুম, খুন, জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে এমন দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা। জনসভার মাঠে সকাল থেকেই ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তুরের নেতাকর্মীরা হাম নাত পরিবেশন করেছেন। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীর ব্যবস্থা করেছে তারা। এইসব স্বেচ্ছাসেবী জনসভাস্থলের আশেপাশে ভারি যানবাহন ও মোটরসাইকেল, অটো রিক্সা চলাচলে দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। 

জিলা স্কুল মাঠের এই জনসভায় রংপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দিতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় জনগণের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হবে জানিয়েছেন তারা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে