বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, "নির্বাচিত সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কোনো সরকার হতে পারে না। নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে। বিনিয়োগ আসবে না, আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে।"
সোমবার (৭ জুলাই) যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালিকের আয়োজনে এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সহযোগিতায় আয়োজিত এক দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট নগরীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় আয়োজন করা হয়।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি মরহুম এম সাইফুর রহমান, নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী এবং জুলাই-আগস্ট মাসে শহীদ হওয়া নেতাকর্মীদের স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, "নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন, জনগণের কাছে যান, বোঝান বিএনপি ছাড়া মুক্তির পথ নেই। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে বাকস্বাধীনতা, নারীর নিরাপত্তা, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং জনগণের চিকিৎসার সুযোগ থাকবে। এই লক্ষ্যে আমরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছি এবং এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান।"
সিলেট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, "এটি আমাদের জন্য পুণ্যভূমি। শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.)-এর আলোয় আলোকিত এ জনপদ। এখানে আসতে শান্তি পাই। তারেক রহমান সাহেবের শ্বশুরবাড়ি এখানে, সে কারণেও সিলেট আমাদের প্রিয়।"
তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন, এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।"
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, "হাসিনা চলে গেছেন, কিন্তু তাঁর দোসররা এখনো দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে। আমলারা এখনো ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে চায়। তবে আমরা তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব এবং জনগণের ভোটে সরকার প্রতিষ্ঠা করব।"
অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, "আমরা হাসিনা মুক্ত হয়েছি, তবে ষড়যন্ত্র মুক্ত হইনি। একটি দল, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, এখন নানা কথা বলছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ঠেকানো।"
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন বলেন, "বিএনপি জনগণের দল, ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে রোখা যাবে না। আওয়ামী লীগ দেশে বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল।"
সভাপতির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বলেন, "প্রবাসে থেকেও বিএনপির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। আমরা দেশ ও প্রবাসে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাব।"
এছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, হাবিবুর রহমান, তাহসিনা রূশদী লুনা, ডা. এনামুল হক চৌধুরী, মুহিদুর রহমান, ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী।