দেশজুড়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ফের উর্দ্ধমুখী। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) শেষ হওয়া ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৪২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ হাজার ১৮৮ জন। এদের মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ ও ২৪ জন নারী।
মঙ্গলবারের হিসাব অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪২৫ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগের বাইরের অঞ্চলের রোগীর সংখ্যা ১২০ জন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগের অন্যান্য অঞ্চলে ৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ১৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন এবং সিলেট বিভাগে একজন নতুন করে ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় দুইজন এবং খুলনা বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুবরণকারী তিনজনের মধ্যে দুইজন পুরুষ এবং একজন নারী।
চলতি জুলাই মাসের ৮ দিনের হিসাবেই দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৮৯২ জন এবং এই সময়ে মারা গেছেন ৯ জন। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার পর্যন্ত এক হাজার ৩৫১ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে রয়েছেন ৩৮৬ জন এবং বাকি ৯৬৫ জন রয়েছেন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট ৪ হাজার ৩৪৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন। এ সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।
পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। আর ২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের।
সংশ্লিষ্টদের মতে, চলমান বৃষ্টি, পানি জমে থাকা এবং আবহাওয়ার আদ্রতা এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।