ভরা বর্ষায়ও পানি নেই সৈয়দপুরে, আমন চাষ নিয়ে বিপাকে কৃষক

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ১১ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
ভরা বর্ষায়ও পানি নেই সৈয়দপুরে, আমন চাষ নিয়ে বিপাকে কৃষক

এখন চলছে আষাঢ় মাস, ভরা বর্ষাকাল। এ সময় সাধারণত চারিদিকে পানি থই থই করে। খাল, বিল,নদী নালা ভরে যায় পানিতে। কিন্তু মধ্য আষাঢ় চললেও নেই আকাশের পানি। ফলে আমন আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির। বীজতলায় উঠতি  বীজ লালচে রং ধারণ করেছে। কোন কোন বীজতলার বীজ পানি না পেয়ে নষ্ট হচ্ছে। কয়েক মাস থেকে পানি নেই এ অঞ্চলে। মাঝে মাঝে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেও পানি আসে না। নীলফামারীর আশপাশে পানি হলেও কেন যেন পানি নেই সৈয়দপুরে। মাঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হলেও তাতে ভিজে না মাটি। আমন রোপন করতে হলে প্রয়োজন প্রচুর পানির। কাঙ্খিত পানি না হওয়ায় আমন রোপন করতে পারছেন না এ এলাকার কৃষক। এখন অনেকটা খাঁ খাঁ করছে পথ ঘাট।

 সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ ফজলুল হক জানান,খরিপ-২ মওসুমের আমন ধান চাষ সম্পূর্ণ বৃষ্টির ওপর নির্ভর করতে হয়। বাড়তি সেচ ছাড়াই আমন ধান চাষ করে তারা গোলায় তুলেন। ফলে খুশি হয়েই কৃষকরা নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে। এবার পানির জন্য করতে হচ্ছে হাহাকার। তবে এখনো সময় রয়েছে। পানি নামলে আমন চাষ ভাল হবে।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, আমন মওসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৯ শ ২০ মেট্রিক টন। জমির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, ১ লাখ ১৩ হাজার ২ শ ২০ হেক্টর । এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে, মাত্র ৫ শ ৫৭ হেক্টর। চলতি বছরের মার্চ মাসে মাত্র ৩ মিলিমিটার,এপ্রিল মাসে ১শ ৩০ মিলিমিটার, মে মাসে ৩শ ২৬ মিটিমিটার, জুন মাসে ৩শ ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের কোন রেকর্ড নেই।

বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক বাদল সরকার বলেন, চারার বয়স সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ দিন হলেই আমন রোপণ করতে হয়। আমার চারার বয়স ৩৫ দিন পার হলেও অনাবৃষ্টির কারণে আমন রোপণ করতে পারেনি।

বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের কৃষক মমিনুর রহমান জানান,এ মাসে পানি না হলে আমন আবাদ ভাল হবে না। কারণ আষাঢ় মাসেই আমন রোপনের উপযুক্ত সময়। আষাঢ়ে চারা রোপন করতে না পারলে আবাদ ভাল হবে না।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমন চাষ শুরু হয় ১৬ জুলাই থেকে। নীলফামারীর অধিকাংশ কৃষক, আগাম আলু চাষ করেন। এ কারণেই অনেকেই হাইব্রীজ জাত ও উপশি জাতের পাশাপাশি আমনের চারা আগাম করে থাকেন। এখনও সময় আছে। আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। বৃষ্টিপাত না হলে, সেচের মাধ্যমে দ্রুত আমন চাষ করতে হবে। সেক্ষেত্রে জেলার আলু চাষি কৃষকরা আমন গোলায় তুলে আগাম আলু রোপণ করতে পারবে। আসমানের পানিতে অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। 

সৈয়দপুর পৌর এলাকার কাজী পাড়ার কৃষক হাকিম ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, আষাঢ় মাসে আমন রোপন করতে পারলে ফলল ভাল হয়। তবে শ্রাবনের প্রথম দিকেও যদি জমিতে আমন রোপন করা যায় তাতেও ফলল হবে। শ্রাবনের শেষে রোপন করা চারা থেকে তেমন একটা ফলল ভাল হয় না।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে