লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে বিক্রি হয়ে দীর্ঘ ৯ মাস বন্দি ও নির্যাতনের শিকার হওয়া মহেশপুর উপজেলার মতিয়ার রহমান সাগর অবশেষে দেশে ফিরেছেন। তিনি মহেশপুর উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ইসা নবীর ছেলে।বুধবার বুরাক এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। ওই ফ্লাইটে সাগরসহ ১৬২ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন, যারা বিভিন্ন সময়ে ণিবিয়ায় আটকা পড়েছিলেন।
সাগরের পিতা ইসা নবী বলেন, ২০২৩ সালে একটি ভালো চাকরি করবে এমন আশায় আমার ছেলে সাগ কে আমাদের গ্রামের এক দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় যান। ছেলেকে পাঠাতে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যায় হয়। ছেলে সাগর কে নিয়ে যাওয়া সময় বলেছিল লিবিয়ায় ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ দিবে। কিন্তু বাস্তবে তাকে ইতালি পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে এক মাফিয়া চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়।সেখানে আরও ৮০ জন বাংলাদেশির সঙ্গে সাগরকে বন্দি রাখা হয় একটি অন্ধকার ঘরে। বাড়ি থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাদের ওপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন। লোহার রড, লাঠি, এমনকি বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করা হতো তাদের ওপর।এক পর্যায়ে সাগরের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে দালালরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে সাগর কোনো ভাবে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
তার পরিবার ব্র্যাকের কাছে সহায়তা চাইলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ট্রাফিকিং ইন পারসনস অফিস ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন তাদের তদারকিতে এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর মাধ্যমে সাগরকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ‘সেইফ হোমে’। সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অবশেষে দেশে ফেরানো হয় তাঁকে।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল-আমিন নয়ন বলেন,এই প্রত্যাবাসন শুধু দেশে ফেরা নয়, এটি এক তরুণের জীবন বাঁচার গল্প। মাফিয়াদের হাত থেকে উদ্ধার করা সাগরকে ফেরাতে আমরা মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করেছি।