কুড়িগ্রামের চিলমারী’র জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা আব্দুর রহমান আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের লক্ষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে নিজ এলাকায় বেগবান করার জন্য ঢাকা থেকে চিলমারী চলে আসেন। চিলমারীতে এসে ছাত্র-জনতাকে সংগঠিত করে গত বছর ২ আগস্ট শতাধিক ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার সরকার পাড়া এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপজেলা সদরে এসে এলএসডি মোড়ে একটি পথসভা করেন। পথসভায় বক্তব্য দেয়ার সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী ছাত্রলীগের ৩০-৩৫জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আশরাফুল আলম ও শামীমের নেতৃত্বে রড, লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে আব্দুর রহমানকে বেধরক মারপিট করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে চিলমারী মডেল থানার পুলিশ বুট জুতাদিয়ে লাথি মারতে থাকে এতে করে আব্দুর রহমানের মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে গিয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে চিকিৎসা নিতে বাঁধা প্রদান করেন। চিকিৎসা ছাড়াই স্থানীয়রা তাকে নিজ বাড়িতে পৌছে দেন। বাড়িতেও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে আব্দুর রহমান আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে ৪দিন থাকার ফলে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে না পেরে মেরুদন্ডের হাড়ের ব্যপক ক্ষতি হয়। ০৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে ওই দিন আব্দুর রহমান বিকেলে বাড়িতে ফিরে আসেন। অর্থাভাবে ঠিকমত চিকিৎসা করতে পারেনি। এ ব্যাপারে ১৩ ফেব্রুয়ারি/২৫ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চিলমারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ আসামী গ্রেফতার করেনি। আসামীরা এখনো বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মরহুম মাওলানা মাহফুজার রহমানের একমাত্র ছেলে আব্দুর রহমান। চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। টিউশনি করে নিজে পড়ালেখাসহ পরিবারের খরচ চালাতেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় টিউশনি করাতে না পারায় অর্থাভাবে তিনি ও তার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। জানা যায়, আব্দুর রহমান ঢাকা তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন। বর্তমানে তিনি মেরুদন্ডের প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে অতিকষ্টে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছেন। আব্দুর রহমান বলেন, টিউশনি করে নিজের ও সংসারের খরচ চালাতেন সরকার আমাদের জন্য কি করবেন তাও জানি না। ভবিষ্যতে আব্দুর রহমান পড়াশুনা শেষ করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করতে চান।