রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের এক ভূমিহীন পরিবার অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক বিরোধের জেরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুজন মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সরকারি পরিত্যক্ত খাস জমিতে বসবাস করে আসছে। তার বাবা আলমগীর হোসেন একজন দরিদ্র ভ্যানচালক ও কৃষক। অন্যের জমি বর্গাচাষ করেই চলে তাদের সংসার। সমপ্রতি ফসলি জমি বর্গা নিয়ে এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতা বিশেষ করে মেজবাহুল হক হৃদয়, শাহিন মিয়া (মমিনপুর ইউনিয়ন, জাকারিয়া, মুকুল মিয়া, আপেল, আব্দুর রাজ্জাকসহ আরও ১০-১২ জন তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ১১ মার্চ চাচা আনারুল ইসলামকে পথ থেকে ধরে মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। চাচি ফরিদা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করে শ্লীলতাহানি করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে উল্টো পরিবারটির বিরুদ্ধে হুমকি দিতে শুরু করে।
পরবর্তী সময়ে, ২০২৫ সালের ১৩ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে আবারও হামলা চালিয়ে বাবাকে মারাত্মকভাবে আহত করা হয় এবং গভীর রাতে তাদের টিনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে ৪টি বসতঘর, ১টি গোয়াল ঘর, মুরগি ও কবুতরের খামার, আসবাবপত্র, মূল্যবান তামাকসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে জানান, আগুনে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার না করায় তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয় এবং পরিবারটিকে মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সুজন মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, পুলিশের তদন্তে গাফিলতির কারণে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে এবং নতুন একজন কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো প্রকৃত বিচার না পাওয়ায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা জাতির বিবেক। আপনাদের লেখনির শক্তিতে আমরা বিচার পেতে পারি। অনুগ্রহ করে আমাদের পাশে দাঁড়ান, যাতে আমরা ন্যায়বিচার পাই।”