প্রকাশিত সংবাদের ১১ মাস পর এক সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে হয়রানিমূলক মানহানীর অভিযোগে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হলে বিএনপির ইতিবাচক সংবাদ বর্জনের হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বরিশালের সংবাদকর্মীরা।
সিনিয়র সাংবাদিক আকতার ফারুক শাহিনের বিরুদ্ধে পদস্থগিত বিএনপি নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে এই হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বরিশালের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা। রবিবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে বরিশাল প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাংবাদিক ফোরামসহ বরিশালের সকল সাংবাদিক সংগঠনের আয়োজনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সভায় বরিশালের সকল সংগঠনের সাংবাদিকবৃন্দ, বিভাগের ছয়টি জেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ উপজেলার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধন শেষে বরিশালের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। স্মারকলিপিতে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিতে মামলা সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা এবং দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির পদস্থগিত সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) বিলকিস জাহান শিরিনের দায়ের করা মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো প্রধান ও এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আকতার ফারুক শাহিনকে। সূত্রমতে, গত বছরের ১১ আগস্ট পদস্থগিত নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিনসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে জনগণের ব্যবহার করা কয়েকশ’ বছরের পুরনো একটি পুকুর দখল চেষ্টার অভিযোগে যুগান্তর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন আকতার ফারুক শাহিন। সংবাদ প্রকাশের ১১ মাস পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিনিয়র সাংবাদিক আকতার ফারুক শাহিনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানীর মামলা দায়ের করেন বিএনপি নেত্রী শিরিন।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরুর সভাপতিত্বে ও বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদী মানববন্ধন চলাকালীন অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশ হলেই মামলা দেওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য মারাত্মক হুমকি ও ফ্যাসিবাদের নমুনা। মামলা করে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। তার প্রমাণ জুলাই অভ্যুত্থান। কোন সংবাদ নিয়ে অভিযোগ থাকলে যেকোন ক্ষুদ্ধ ব্যক্তি প্রেসকাউন্সিলে যেতে পারেন। কিন্তু তা না করে সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার মানে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে দমন করার অপচেষ্টা।
বক্তারা, বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে অনতিবিলম্বে পদস্থগিত নেত্রী শিরিনের দায়ের করা মিথ্যে মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি সাংবাদিক নেতারা বিএনপির সবধরনের ইতিবাচক সংবাদ বর্জনের হুমকি দিয়েছেন।