ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট জালিয়াতির মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভ্যন্তরীণভাবে তোলপাড়ের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় মামলার কার্যক্রম চালু রাখতে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল, যখন গুলশানের একটি প্রকল্পে ইস্টার্ন হাউজিংকে অনৈতিকভাবে প্লট নির্মাণের সুযোগ করে দেওয়ার বিনিময়ে একই ভবনে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণের অভিযোগ ওঠে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের ভিত্তিতেই টিউলিপ সিদ্দিকসহ রাজউকের সাবেক দুই কর্মকর্তা শাহ খসরুজ্জামান এবং সরদার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলার তদন্ত যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে, ঠিক সেই সময় হাইকোর্টে শাহ খসরুজ্জামানের করা রিটের প্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। রোববার (১৩ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবীরা।
দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান জানান, তদন্ত চলাকালে হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশ কমিশনের জন্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কারণ, এ ধরনের আদেশের ফলে মামলার তদন্ত কার্যত থমকে যেতে পারে। তাই কমিশন উচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দ্রুত আপিলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মতে, তদন্ত সম্পূর্ণ না হলে আদালতে চার্জশিট দাখিল এবং বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
তবে দুদকের আইনজীবীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হাইকোর্টের লিখিত আদেশে পুরো মামলার তদন্ত নয়, বরং শুধু আবেদনকারী খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিতের নির্দেশনা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মামলার অন্যান্য অংশ নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলতে পারে কি না, সেটিও কমিশন আইনি প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার করতে চায়।
উচ্চ আদালতের এই আদেশে আপাতত টিউলিপ সিদ্দিকের মামলার তদন্ত কার্যক্রম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। দুদক চায়, তদন্তকাজ দ্রুত সম্পন্ন করে চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে, যাতে এ বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।