দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় রাস্তার পাশের একটি পাটক্ষেত থেকে দেলোয়ার হোসেন নামে এক ভুট্টা ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গতকাল ১৫ জুলাই মঙ্গলবার আনুমানিক সকাল ৬টায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বাংলাভাষা কলেজের পশ্চিম পাশে একটি পাটক্ষেত থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা পাওনা ও ঋণের হিসাব সম্বলিত একটি কাগজ পাওয়া যায়। নিহত দেলোয়ার হোসেন (৫৫) উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের মাড়গাঁও গ্রামের তফির মেম্বার পাড়ার মৃত ছলেমান আলীর ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৪ জুলাই সোমবার বিকালে দেলোয়ার হোসেন প্রতিদিনের ন্যায় ব্যবসায়ীক কাজে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তার সঙ্গে রাত ৯টা ২৩ মিনিটে পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে একই গ্রামের কৃষক আব্দুল বাকী তার পাটক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে কাদায় লেপটে থাকাবস্থায় দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ দেখতে পান। তিনি স্থানীয়দের তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ দিলে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। বিষয়টি থানা পুলিশে অবহিত করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহতের ছেলে মামুন রানা মিম জানান, গত সোমবার বিকালে বাবা ব্যবসায়িক কাজে চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকায় যান। সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশের বাঁশের চৌকিতে বসেছিলেন। আমি তাঁকে বাড়িতে যেতে বললে তিনি পরে যাবেন বলে জানান। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইলে কল দিলেও তা সুইচ অফ পাওয়া যায়। সকালে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের পাটক্ষেতে তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে আমাদের সংবাদ দেন।
নিহতের জামাতা রেজাউল করিম বলেন, আমার শ্বশুরের সঙ্গে কারো ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল না। তবে তিনি কিছুদিন ধরে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে সমস্যার কথা বলছিলেন। আমরা মনে করি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। পরিবারের দাবি, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না এবং জমিজমা নিয়েও তাঁর কারো সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না।
এ ঘটনায় নিহতের জামাতা রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে খানসামা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এমন একজন নিরীহ ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজমূল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে ইতিমধ্যেই গুরুত্বসহকারে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।