রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, তার ভাষ্য মতে এ ঘটনা কোনো রাজনৈতিক বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে ঘটেছে।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে 'সোহাগ হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে' আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য উপস্থাপন করেন।
পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করে ডিএমপির এ কমিশনার বলেন, “এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো-মামলা দায়েরের জন্য নিহত সোহাগের সাবেক স্ত্রী লাকী আক্তার থানায় আসেন, কিছুক্ষণ পর সোহাগের সৎ ভাই রনিও থানায় আসেন। তারা নিজের মধ্যে পরামর্শ করে ২৩ জনকে আসামি করে একটি খসড়া এজাহার প্রস্তুত করেন। এরমধ্যে নিহতের আপন বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম থানায় এসে এজাহার দায়েরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।”
“এ সময় তার সামনে আগের খসড়া এজাহার উপস্থাপন করা হয়। এ সময় তিনি আগের খসড়া এজাহার থেকে পাঁচজনের নাম বাদ দিয়ে নতুন করে আরও একজনের নাম যুক্ত করে মোট ১৯ জনকে আসামি করে এজাহার দাখিল করেন। নিহতের বোনের এজাহার দাখিলের পর কোতোয়ালি থানায় মামলা রুজু করা হয়। মামলা নম্বর-৭। কোনো ঘটনা এজাহার একটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী মাত্র। এজাহারের উল্লেখিত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেন।”
“ঘটনা চলাকালীন ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সরোয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় অভিযুক্তরা একটা মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নাই, ব্যবসায়ীদের ভয় নাই’ এমন স্লোগান দিচ্ছিল।
“এ অবস্থায় চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সরোয়ার ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহজনক মাহমুদুল হাসান মহিন ও রবিন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় পটুয়াখালী থেকে রেজওয়ান নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে হত্যায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে সোহাগকে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে পরেরদিন মামলা করেন। এমন হত্যার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে জনমনে ক্ষোভের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনাকে নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যেও বেশ সমালোচনা কিংবা আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।