বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সারাদেশে নতুন করে ১১৪ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নতুন মৃত্যুর ঘটনাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ঘটেছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ জনে।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩ জন, ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকায় ৩১ জন, ঢাকা মহানগর এলাকায় ২৯ জন (এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৯ জন, উত্তর সিটিতে ১০ জন), বরিশাল বিভাগে ১০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন রয়েছেন। উল্লেখ্য, খুলনা বিভাগের রোগী সংখ্যা এবারকার প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়নি।
একই সময়ে ১০৯ জন রোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৩৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫ হাজার ১১৭ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
প্রতিবছরের মতো এবারও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ এক হাজার ২১৪ জনে পৌঁছেছে, এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৭৫ জনের।
এর আগে ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় এবং তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। জনসচেতনতা, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ এবং স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।