জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে আয়োজিত বিএনপির কর্মসূচিতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনপূর্ব পরিবেশ নিয়ে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজিত মৌন মিছিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, একটি মহল আবারও ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার ভাষায়, "শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, দাফন হয়েছে দিল্লিতে।" এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ইঙ্গিত করে রাজনৈতিক পরিণতির প্রতীকী চিত্র তুলে ধরেন।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য বজায় রাখতে হবে। তাঁর মতে, কেউ কেউ নির্বাচন পেছানোর মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়, আবার কেউ ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার’ করতে চাচ্ছে। তিনি এ ধরনের প্রবণতাকে ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠার প্রয়াস হিসেবে বর্ণনা করেন।
সালাহউদ্দিন জামায়াত ইসলামীকে উদ্দেশ করে বলেন, একটি দল সব সময় বিভ্রান্তির রাজনীতি করেছে, যারা জনগণের আবেগের বাইরে গিয়ে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা এখনো অন্ধকার রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিভ্রান্তির মধ্য দিয়ে যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও ‘পিআর পদ্ধতি’র (Proportional Representation) প্রচার করছেন, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ।
তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, “পিআর পদ্ধতি খায় না মাথায় দেয়, কেউ বুঝে না।” অর্থাৎ এ ধরনের প্রস্তাব সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়, বরং রাজনৈতিক কৌশলের অংশ মাত্র।
জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা না হলে, ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর দায় বর্তাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্যে বিএনপির একটি দৃঢ় অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে—তারা জুলাই সনদ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য’র নামে বিরোধী দলগুলোর একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সম্মিলন চায়। একই সঙ্গে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং বিতর্কিত দলগুলোর নানা প্রস্তাব ও তৎপরতাকে বিএনপি সন্দেহের চোখে দেখছে।