গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামের মাদকাসক্ত যুবক মো. নূরুল আমীনের (১৯) অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ১৮ জুলাই শুক্রবার দুপুরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সহোদর বড় ভাই বনি আমীন। তারা দুজন ওই গ্রামের মো.শাহজাহানের ছেলে। উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ বাবুল হোসেন জানান, সেলদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র শাহজাহানের (৬০) ভিটা-মাটি ছাড়া আর তেমন কোনো জায়গা-জমি নেই। তিনি ও তার স্ত্রী আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজনের মাটি কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে কয়েক বছর আগে বড় ছেলে বনি আমীনকে সৌদি আরবে শ্রমিক ভিসায় পাঠিয়েছিলন। গত দুই মাস আগে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। আর ছোট ছেলে নূরুল আমীন গত কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পরিবারের সব জিনিস ও কাপর চোপরও বিক্রি করে দিত এবং লোকজনের সাথে দুর্ব্যবহার করতো। বিশেষ করে তার নেশা ধরলে পিতার কাছে টাকা চেয়ে না পেলে সবকিছু ভাংচুর করত এবং তার পিতা মাতাকেও মারধর করতো। নিহতের পিতা মোঃ শাহজাহান জানান, তার মাদকাসক্ত ছেলে নূরুল আমীনকে ভালো করতে দুই দফায় প্রায় তিনমাস মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে রেখে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। সব খরচই তার প্রবাসী বড় ছেলের পাঠানো টাকা থেকে হয়েছে। কিন্তু বাড়ি ফিরে এসেই আবার মাদক সেবন শুরু করে। শুক্রবার সকালেও নূরুল আমীন তার কাছে মাদক কিনতে দুই হাজার টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় সে বাড়িতে ভাংচুর শুরু করলে তিনি ভয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। পরে সে তার মায়ের কাছে টাকা দাবি করে গালিগালাজ করতে থাকলে বড় ভাই এসে তাকে বেধরক পিটুনি দিয়ে ঘরে আটকে রাখে। পরে দুপুরের দিকে ঘরে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে বড় ভাইয়ের আঘাতে ছোট ভাই নিহত হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।