ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশের ২৭ কিলোমিটারসহ সড়কটির যশোর পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার বর্তমানে বেহাল অভস্থায় পরিনত হয়ে। এ সড়কে চলাচলে একবারেই অনুপয়োগি হয়ে পড়েছে।অধিকাংশ স্থানে পিচ-পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে বর্ষার পানি জমে রয়েছে। ভাঙ্গাচোরা থাকায় ৪৫ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে যানবাহন গুলোর ৯০ মিনিটি সময় লেগে যাচ্ছে।এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মালবাহী ও যাত্রিবাহী যানবাহন বেনাপোল ও দর্শনা স্থল এবং মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ দক্ষিণের জেলা উপজেলায় যাতায়াত করে। এছাড়া খুলনা বিভাগের সঙ্গে রাজশাহী বিভাগের যোগাযোগের একমাত্র সড়কপথ এটি। কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি আজ বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। সড়কটির যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়কের ৪৭ কিলোমিটার অধিকাংশে পিচ-পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে ইটের সলিং করে কোন রকমে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করলে ও বর্ষার পানিতে চলাচল করা যাচ্ছে না।একই অবস্থা যশোর অংশের ২০ কিলোমিটার সড়ক। ফলে ভাঙ্গাচোরা ৪৫/৫০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে যানবাহন গুলোর প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লেগে যাচ্ছে। সড়কের এ দুরবস্থার কারণে প্রতিদিন যাতায়াত কারীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রায় দুই বছর ধরে সড়কটির এমন বেহাল অবস্থায়। গেল বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে সড়কের এমন অবস্থার তৈরি হয়। শীত শেষে গ্রীস্মতে ধুলাবালি যন্ত্রনায় কাহিল অবস্থা ভোগ করতে হয়েছে।বেশ কয়েক দিনের ভারী বর্ষায় ওই জায়গা গুলোতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন দিন ওই গর্তে যানবাহন দেবে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যানজট সৃষ্টি হয়, ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না মানুষের।দীর্ঘদিন এ রুটে চলাচলকারী মানুষ চরম ভোগাতিন্তে পড়ছেন। মহাসড়কের এ রুটের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত আর জমে থাকা পানি।ঝিনাইদহকুষ্টিয়াওযশোরসড়কেররঘুনাথপুর,আরাপপুর,ভাটই,গাড়াগঞ্জ,চড়িয়ারবিল,শেখপাড়া,বিষয়খালী,কালীগঞ্জ,বারোবাজার,বারিনগর,চুড়ামনকাঠিসহ বিভিন্ন স্থানের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। তৈরী হয়েছে বড় বড় গর্ত। যার কারনে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা দেখা দিচ্ছে। অনেকে মারা ও গেছে। এসব স্থানে পড়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে খানা-খন্দে কিছু ইট বালি দিয়ে মেরামত করলেও কয়েকদিন পরে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।এই সড়কটি বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে চরম অব্যবস্থপনায়।পুরো সড়ক জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে গর্ত। কোথাও বড়, কোথাও ছোট, আবার কোথাও গভীর।আর বর্ষার সময় সেই গর্তেই জমে থাকে বৃষ্টির পানি।অনেক স্থানে রাস্তা চেনারই উপায় নেই।বোঝা যায় না কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল।এসব গর্ত এখন যাত্রী ও চালকদের কাছে যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।এ সহাসড়ক দিয়ে যেতে একই গাড়ির চাকা দিনে তিন থেকে চারবার পর্যন্ত পাংচার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। অসুস্থ রোগী নিয়ে চলা অ্যাম্বুলেন্সের চালকরা এই রাস্তায় পড়ে যায় চরম বিপাকে।ঝাঁকুনিতে অনেক রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে পড়ে। সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় অনেক সময় ঘটে প্রানহানি।তখন তাদের কাছে এই সড়ক হয়ে ওঠে দুঃসহ অভিজ্ঞতার এক জ্যান্ত যন্ত্রণা।সড়কে জমে থাকা গর্তের পানি সরিয়ে ইট-বালু দিয়ে ভরাট করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।তারা বৃষ্টির ভেতর গর্তে সামান্য ইট-বালু ফেলে দায় মুক্তি নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ থেকে সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প ‘উইকেয়ার’-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল থেকে যশোরের চাচড়া পর্যন্ত ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার সড়ক উইকেয়ার প্রকল্পের আওতায় ছয় লেনে উন্নীত করণের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পে সড়কটি লট-১, ২ ও ৩ এ তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।২০২১ সালে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো ছয় লেনের এ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। সময় মত কাজ শেষ করতে না পারায় প্রথম দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে সংশোধন প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এতে জমি অধিগ্রহণ ব্যয় ৩ গুণ বাড়িয়ে ২ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের উইকেয়ার ফেজ-১-এর উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ মো. নিলন আলী বলেন, পানির সংস্পর্শে এলে বিটুমিনাস সার্ফেস নষ্ট হয়ে যায় যে কারনে রাস্তার এ অবস্থার পরিনত হয়েছে।