সরাইলে ৬ গ্রামের দু:খের নাম শাহবাজপুর-কুচনি বুড্ডা সড়ক

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ১৯ জুলাই, ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
সরাইলে ৬ গ্রামের দু:খের নাম শাহবাজপুর-কুচনি বুড্ডা সড়ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহবাজপুর-কুচনি বুড্ডা সড়কের বেহাল দশা। খানাখন্দ উচুঁ নীচু কাঁদাপানি জমে খাল আকৃতি। যখন তখন বিকল হয়ে পড়ছে অটোরিকশা। ঘটছে দূর্ঘটনা। রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আতঙ্ক। নাভিশ্বাস উঠছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের। সবমিলিয়ে এ সড়কে চলাচলকারী সকল যাত্রীদের দুর্ভোগ এখন চরমে। দুই ইউনিয়নের প্রায় ৬টি গ্রামের দু:খের নাম এখন ‘শাহবাজপুর-কুচনি বুড্ডা সড়ক’। দীর্ঘদিনের দূর্ভোগ ও দু:খ থেকে পরিত্রাণ চাই ১০ সহস্রাধিক লোক।

সরজমিন অনুসন্ধান ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের শাহবাজপুর প্রথম গেইট থেকে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কুচনি হয়ে বুড্ডা গ্রামের তিতাস নদীর পাড় পর্যন্ত প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার সড়কটির বেহালদশা। আতকা বাজার থেকে বুড্ডা গ্রাম পর্যন্ত ছোট বড় হানাখন্দ কাঁদার স্তুপে পায়ে হাঁটাই কষ্টকর। বৃষ্টি হলে সড়কটির বেশ কয়েক জায়গা খাল বা পুকুরের আকৃতিধারণ করে। কোথায় গর্ত তা আন্দাজ করতে পারে না চালক ও পথচারীরা। হেলে দুলে ঝুঁকি নিয়ে চলে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। ফলে ঘটছে দূর্ঘটনাও। এ সড়ক দিয়ে শাহবাজপুর ইউনিয়নের প্রথম গেইট, আতকা বাজার, বন্দের হাটি ক্ষমতাপুর আর নোয়াগাঁও কুচনি বুড্ডা গ্রামের কয়েক হাজার নারী পুরূষ চরম দূর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়েই চলছেন গত প্রায় এক বছর ধরে। বৃষ্টি হলে কাঁদাপানিতে একাকার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করছে কুচনি ও বুড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকশত শিশু শিক্ষার্থী। শাহবাজপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এই দুই গ্রামের শিক্ষার্থীদের দু:খ কষ্টও অবর্ণনীয়। ৬ গ্রামের গুরূতর অসুস্থ্য রোগী গর্ভবতী মহিলাদের দু:খ ও আতঙ্কের সড়ক এটি। সন্ধ্যার পর লাফিয়ে বৃদ্ধি পায় অটোরিকশা ভাড়া। এক বছরেরও অধিক সময় ধরে হাজারো কষ্ট মাথায় নিয়েই এই সড়ক দিয়ে চলছেন ওই জনপদের লোকজন। তারা সকলেই এখন এই দু:খ থেকে পরিত্রাণ পেতে চান। কুচনি গ্রামের সমাজকর্মী ও সাংবাদিক শেখ মো. সিরাজুল ইসলাম ও তরী সরাইল উপজেলা শাখার সদস্য মো. শকিল মিয়া বলেন, এক সময়ের কার্পেন্টিং করা এই সড়কটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গ্রামের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়েই জীবনের প্রয়োজনে সড়কটি দিয়ে যাতায়ত করছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি দয়া করে সড়কটির সংস্কার করে ৬ গ্রামের মানুষের দু:খ লাঘব করূন। বুড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লাকী রানী দাস বলেন, আমরা গত ৮-৯ মাস ধরে বেহাল এই সড়ক দিয়ে অরেক কষ্টে যাতায়ত করছি। লক্কর জক্কর এই সড়কে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। সময়ও লাগছে অনেক। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে সড়ক দিয়ে যাওয়া আসা করছে। কবে এই দু:খ ঘুছবে জানি না। শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মুনির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি যোগদানের পরই জেনেছি সড়কটি দুই ইউনিয়নের অনেক লোকের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জনস্বার্থে সংস্কার করা খুবই জরূরী। সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আনিছুল ইসলাম ভূঁইয়া ওই সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা সড়কটির পূণর্বাসনের জন্য সিসিভি প্রকল্পে (কুমিল্লা-চাদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রেরণ করেছি। এখনো অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন হলেই কাজ শুরূ করব। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে