ভেড়ামারায় বাবার বিরুদ্ধে মেয়েদের সংবাদ সম্মেলন

এফএনএস (শাহ্ জামাল; ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া) : | প্রকাশ: ১৯ জুলাই, ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম
ভেড়ামারায় বাবার বিরুদ্ধে মেয়েদের সংবাদ সম্মেলন

তাফরিহা খাতুন নাইমা। ভেড়ামারা সরকারী মহিলা কলেজের  বিএসএস প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বাবা-মা আর পাষান্ড বখাটে স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয় নিয়েছেন বোন আর দুলাভাই এর সংসারে। আর আশ্রয় দেওয়ায় যেন কাল হয়েছে বোন আর সেই দুলাভাই’র। গত ৫ বছর ধরেই বখাটে স্বামী, বাব-মা যেন পিছু ছাড়ছেই না তাফরিহা খাতুন নাইমা এবং তাদের আশ্রয়দাতা বোন আর দুলাভাই সাংবাদিক মহন আলী’র। নাইমাকে কিডন্যাপ করার একাধিক প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ার পর এখন দুলাভাই কে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সেনাবাহিনী দিয়ে হেনস্তা করার পথ বেছে নিয়েছেন তারা। যেন ভয় পেয়ে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে দেন নাইমা। এমন বিষয় তুলে ধরে দুই বোন পাষান্ড বাবার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনো করেছেন। শুক্রবার রাতে ভেড়ামারা হাইস্কুল গলিতে স্থানীয় সাপ্তাহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকা অফিসে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে নানা বিষয় তুলে আনেন দুই বোন তাফরিহা খাতুন নাইমা এবং রোকাইয়া খাতুন।

সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, তাদের পিতা ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন কোদালিয়াপাড়া গ্রামের মোঃ আবু নেছার উদ্দীন নান্টু (৫০)। র্দীঘদিন ধরেই আমার বাবা আমার উপর শারিরিকভাবে ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছে। ৫ বছর আগে গত ১০ জুন ২০১৯ নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অপ্রাপ্ত বয়সে জোরপূর্বকভাবে একজন দুঃচরিত্র বয়স্ক বখাটে লোকের সাথে জোর করে বিবাহ দেয়। তার আমি ছিলাম ৩ নম্বার স্ত্রী। আমি বাবার বয়সী লম্পট প্রকৃতির ওই লোকের সাথে সংসার করতে রাজি না হলে, আমার উপরে তাদের অমানবিক শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। অসহনীয় শারিরীক ও মানসিক অত্যাচারে আমি দিশেহারা ও নিরুপায় হয়ে একাধিকবার পালানোর চেষ্টা করি। এবং এক সময়ে ওই বখাটে লম্পট কে তালাক দিয়ে পালিয়ে আসি আমার আপন বড় বোন ভেড়ামারা কাঠেরপুলের বাসিন্দা রোকাইয়া খাতুন আর দুলাভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মহন আলী’র বাড়িতে আশ্রয় নিই। তারপর থেকে আমার অভিভাবক, আমার মা-বাবা সবই আমার বোন এবং দুলাভাই। আমার বাবা আবু নেছার উদ্দীন একজন মাজার ভক্ত মানুষ। সে চাইতো আমি মাজার ভক্ত কোন মানুষ কে বিয়ে করে মাজার মাজার ঘুরে মানুষের সেবা করে বেড়াই। সেই লক্ষ্যেই জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। আমার মা-বাবা কখনোই আমার ভালো চাইনি। তারা লেখাপড়াও বন্ধ করে দিয়েছিল। বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর, আমার সকল দায়িত্ব নিয়েছে তারা। আমি এখন ভেড়ামারা সরকারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের বিএসএস ১ম বর্ষের ছাত্রী। বর্তমানে আমি মানসিক শান্তিতে এবং নিরাপদে আছি।

সাংবাদিক সম্মেলনে তাফরিহা খাতুন নাইমা অভিযোগ করে বলেন, ৫ বছর আগে যখন পালিয়ে এসেছিলাম, সে সময় তারা কিডন্যাপ করা ছাড়াও নানা রকম ঝামেলা শুরু করেছিল। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বোনের বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। এ বিষয়ে লিখিত চুক্তিপত্রও আছে। কিন্তু তারা আমার পিছু ছাড়ে নি। উল্টো আমার কারনে আমার বোন এবং দুলাভাই সাংবাদিক মহন আলীও তাদের টার্গেট এ পরিনত হয়েছে।  সম্প্রতি ওই চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠে আবারও ষড়যন্ত্র করছে। গত ৮ জুলাই দুপুরে আমার বোনের কাঠেরপুলস্থ কম্পিউটার’র দোকানে এসে তারা অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ প্রদান করে আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানায় লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তাফরিহা খাতুন নাইমা’র বড় বোন রোকাইয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা’র অত্যাচারে আমরা দিশেহারা। গত ৫ বছর ধরেই আমাদের যন্ত্রনা দিয়ে আসছে। সমপ্রতি আমার স্বামী সাংবাদিক মহন আলী কে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাকে সন্ত্রাসী বানানোর অপচেষ্টা করেছে। এ বিষয়েও গত ১৬ জুলাই ভেড়ামারা থানায় সাধারন ডায়েরীও করেছে আমার স্বামী।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে