দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ৪০টি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষার্থী ছিল ২২৫৭ জন, পরীক্ষায় পাশ করেছে ১৪৮৬ জন, পাশের হার ৬৫.৯৮%, জিপিএ-৫.০০ পেয়েছে ১৩৫ জন, ৯টি মাদরাসা থেকে ২০৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২৫ পাশ করেছে, জিপিএ-৫.০০ পেয়েছে ৯ জন, ভোকেশনাল ৭টি বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২৪২ জন, পাশ করেছে -১৭৮ জন, পাশের হার ৭৩.৫৫%, জিপিএ ৫-পেয়েছে ৬জন।
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলতি বছরের এসএসসি/দাখিল পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকগণ। অনেক অভিভাবক বড় আশা করে নিজ নিজ সন্তানদের ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছিলেন। চলতি বছর ২০২৪ সনের এসএসসি/দাখিল পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে পাচ্ছে না অভিভাবকেরা। বলরামপুর গ্রামের অভিভাবক আনারুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে রামচন্দ্রপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু ১টি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। হতাশ হয়ে তিনি বলেন, উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাশের হার শতভাগ হবে। কিন্তু পাশের হার হয়েছে ৯৬.৬৪%। অপরদিকে কাহারোল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পাশের হার হয়েছে ৭৯.৮২%। জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে মাত্র ৬ জন। অভিভাবক সুশিল চন্দ্র রায় বলেন, কাহারোল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রেজাল্ট নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। কারণ, দীর্ঘদিন হতে বালিকা বিদ্যালয়টি এসএসসি’র রেজাল্ট বরাবরই ভালো করে আসছিল। কিন্তু এবার হতাশ হয়েছে সকলেই।
অপরদিকে বুলিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে পাশের হার ২৫.৭১%। অভিভাবক সুকুমার চন্দ্র রায় বলেন, আশা করে ভালো ফলাফল করবে আমার মেয়ে তাই বুলিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম আমার মেয়েকে। কিন্তু পাশের বদলে ফেল করেছে। তিনি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম এবং শিক্ষকেরা বিষয় ভিত্তিক পারদর্শী না হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের ফলাফল হতাশ করেছে সকলকেই।
নয়াবাদ গ্রামের অনিল চন্দ্র রায় জানান, নয়াবাদ মিত্রবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক স্কুলে সময় না দিয়ে মুটুনীহাটে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেন। এবার নয়াবাদ মিত্রবাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পাশ করেছে মাত্র ১২ জন। পাশের হার ৪১.৩৮%। জয়নন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪১ জন, পাশ করেছে ২৫ জন, পাশের হার ৬০.৯৮%। ডহচি গ্রামের অভিভাবক হাসান বলেন, ছেলেরা না হয় সংসারের কাজকর্ম, মাঠে-ঘাটে, ক্ষেতে-খামারে বাবার সঙ্গে কাজ করে সেই কারণে লেখাপড়া কম হয়। কিন্তু মেয়েরা সার্বক্ষণিক লেখাপড়া করেও ৪টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফলাফল খুবই খারাপ।
সচেতন অভিভাবকদের দাবী শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাসে অমনোযোগী হন তাহলে কোন সময়ের জন্য ভালো ফলাফল করা সম্ভব নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ক্লাসে বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকার কারণে এবার এসএসসি’র ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে।
এ ব্যাপারে কাহারোল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়াউল ইসলামের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন, সত্যিই এবার কাহারোল উপজেলার ফলাফল খুবই খারাপ ও দুঃখজনক। আগামীতে যাতে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করে সেই দিকে সকলকে সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী, ক্লাসে উপস্থিতি, দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থা এবং অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে সব থেকে বেশী। কেননা, সন্তান স্কুলে যাচ্ছে কি না একমাত্র অভিভাবকই লক্ষ্য রাখতে পারেন।