খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭২১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে । চলতি মাসেই এ বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে।
এদিকে, এক বছরের ব্যবধানে কেসিসির বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে প্রায় ২৬০ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কেসিসির বাজেট কাম অ্যাকাউন্ট অফিসার মো. মনিরুজ্জামান জানান, সরকারি প্রকল্প কমে যাওয়ায় অর্থ বরাদ্দও কমছে। এ জন্য বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় মহানগর খুলনায় নানা সংকট চলছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বেশ কিছু খাল খনন ও অনেক এলাকায় ড্রেন নির্মাণ বাকি। কেসিসির অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো সংকটও প্রকট। নগরীর বেশির ভাগ সড়কের সংস্কার জরুরি। এ জন্য কেসিসির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প নিয়ে চিঠি চালাচালি চলছে চার বছর ধরে। দ্রুত প্রকল্পটি অনুমোদন এবং বরাদ্দ না বাড়ালে খুলনার মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
কেসিসি সূত্র জানায়, মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন নামে প্রকল্প দুটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুমোদন হয়। প্রায় ১ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে এই দুই প্রকল্প। এর মধ্যে সড়ক মেরামতের প্রকল্পটি গত অর্থবছরে শেষ হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে চলতি অর্থবছরে। ২০২১ সালে অনুমোদন হওয়া কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পও চলতি অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। এরপর সরকারি অর্থায়নে চলা কোনো প্রকল্পই কেসিসিতে থাকছে না।
কেসিসির হিসাব বিভাগ থেকে জানা গেছে, করপোরেশনের নিজস্ব আয় দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উন্নয়ন কাজের পুরোটাই আসে প্রকল্পের অনুকূলে সরকারি বরাদ্দ এবং দাতা সংস্থার অনুদান থেকে। ফলে নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন না হলে উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ পাওয়া যাবে না।
হিসাব শাখার কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কেসিসির উন্নয়নকাজে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩১৭ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসেছে ২২৯ কোটি। চলতি অর্থবছরে ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে কমতে থাকা উন্নয়ন বরাদ্দের কারণে নগরীর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের প্রকল্প গত জুনে শেষ হয়েছে। অন্য কয়েকটি সড়ক, জিয়া হল কমপ্লেক্স, ওয়ার্ড অফিস, ড্রেন নির্মাণের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি নিয়ে চার বছর ধরে চিঠি চালাচালি চলছে।
এ বিষয়ে কেসিসির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার বলেন, অবকাঠামো ও অন্যান্য উন্নয়নের জন্য নেওয়া বড় প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদনের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দাতা সংস্থার অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেসিসির বাজেটের আকার ছিল ৮৬১ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২ কোটি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৯৮১ কোটি টাকা।