রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভ এখনও থামেনি। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনার মধ্যেই ওইদিন সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও সি আর আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তারা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে বের হতে সক্ষম হলেও ফের কলেজ গেটে শিক্ষার্থীদের বাধায় ফের অবরুদ্ধ হন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে পুনরায় কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশি পাহারার মধ্যেও গাড়ি কলেজের গেট পার হতে না পারায় শিক্ষার্থীরা দিয়াবাড়ি গোলচত্ত্বরে গাড়ি আটকিয়ে ফেরার পথ রোধ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য হয়ে উপদেষ্টাদের ফের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে হয়।
সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিধ্বস্ত হওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এতে ৩১ জন নিহত এবং ১৬৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। হতাহত শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিহতদের সঠিক নাম পরিচয় প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, ক্ষতিপূরণ, ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমানের পরিবর্তন, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় সংস্কার এবং শিক্ষক ও ছাত্রদের ওপর সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা।
বেলা সাড়ে বারোটার দিকে কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপদেষ্টাদের আলোচনাও হয়। সেখানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে পূরণ করার আশ্বাস দেন। তবে এই আশ্বাস সত্ত্বেও বিক্ষোভ থামেনি এবং শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভের সময়ও সচিবালয়ে প্রবেশ করে গাড়ি ভাঙচুর করেছিল। পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্যে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন।