রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবিতে এবং গভীর রাতে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের প্রতিবাদে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সামনে ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর বারোটার দিকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়েন।
শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য নথুল্লাবাদ এলাকায় গায়েবানা জানাজা পড়েন এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেন। তারা অভিযোগ করেন, এখনও দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রকৃত সংখ্যা ও নাম-পরিচয় যথাযথভাবে প্রকাশ করা হয়নি। অনেক পরিবার এখনও তাদের সন্তানদের খুঁজে পাচ্ছে না।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে না ততক্ষণ আমরা সড়ক ছাড়বো না। মাইলস্টোনে কতজন শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে সঠিক তথ্য এখনও প্রকাশ পাচ্ছে না। সেই সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে সরকার যে ছলচাতুরি করছে তা মেনে নেওয়া যায় না।”
অন্য শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, “সরকারের আচরণ এখন ফ্যাসিস্টের মতো হয়ে গেছে। কিছু বললেই পুলিশ, সেনাবাহিনী পাঠায়। আমরা বলছি, শিক্ষার্থীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। শিক্ষকদের ওপর সেনার হাত তোলা, শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার এসব মেনে নেওয়া হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।”
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের নোটিশ গভীর রাতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে সব কলেজকে তা জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আমরা যথাসম্ভব শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করছি।”
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার জানায়, জনভোগান্তি বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
মাইলস্টোন দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।