গোপালগঞ্জে সহিংসতার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনায় পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
গোপালগঞ্জে সহিংসতার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনায় পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার পরদিনই ঘটনাস্থল ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাসমূহ ঘুরে দেখলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সহিংসতার বিচারিক অনুসন্ধানের জন্য সরকার একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে দুই উপদেষ্টা গোপালগঞ্জে পৌঁছান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা জেলা কারাগারে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত কারা ভবন পরিদর্শন করেন। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তাঁরা এনসিপির সভাস্থল, সংঘর্ষের কেন্দ্রস্থল, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ, জেলা প্রশাসকের বাসভবনসহ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন।

পরে বেলা ২টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপদেষ্টারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের (এনসিপি) সভাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ও সহিংসতা ঘটে। প্রাণহানির ঘটনাকে তিনি গভীর দুঃখজনক ও শোকাবহ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন একজন বিচারপতি এবং সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, “গোপালগঞ্জকে তিনি কেয়ার করেন—এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা আমাদের পাঠিয়েছেন। আমরা আজ শুধু প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছি। সরকার এ ঘটনায় গভীরে যাবে এবং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা গ্রহণ করবে।” তিনি জানান, সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকেরা দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের সাহসিকতাকে সরকার সম্মান জানায়।

সহযোগী উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলগুলো সরেজমিনে দেখে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আইনের শাসন ও নাগরিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা আমাদের সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার।”

মঙ্গলবারের এ সফরে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এবং স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা।

সম্মেলন শেষে সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজ শেষে দুই উপদেষ্টা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে