অল্প বৃষ্টিতেই কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ২৫ জুলাই, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
অল্প বৃষ্টিতেই কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌরসভা প্রথম শ্রেনি হলেও এখানে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিণত হয়। যে কারনে সাধারন মানুষের দূভোগেল শেষ নেই। প্রভাবশাীলরা খাল ভরাট করে বিভিন্ন পাকা স্থাপনা তৈরি করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় চরম জলাবদ্ধতা। অনেকেই পৌরসভার পাকার রাস্তা উপরে প্রাচীর নির্মান, বাসায় প্রবেশ মুখে পাকা নির্মান করেছে।

কালীগঞ্জ পৌরসভাটি ১৯৯০ সালের ১৪ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ৬.১১ কিলোমিটার নিয়ে পৌরসভাটি।যাহার আয়তন ১৫.৮৩ বর্গ কিঃ মিঃ। কালীগঞ্জ পৌরসভা শহরের মধ্যে দিয়ে ঢাকা খুলনা মহাসড়ক এবং মেহেরপুর খুলনা মহাসড়ক বিদ্যমান।৯টি ওয়ার্ডের সম্বন্বয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত।পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তি আছে ১ একর ৪ শতক। খুলনা মেহেরপুর মহাসড়কের পাশে কালীগঞ্জ পৌরসভা অফিস ভবন অবস্থিত।পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা।এই বিপুল জনসংখ্যক অধিবাসীর পৌর শহরে রয়েছে ড্রেন যার ৮৫ শতাংশই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো ও ভরাট অবস্থায় রয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানির নিচে তলিয়ে যায় পৌর শহরের অধিকাংশ আবাসিক এলাকা।পৌরসভা গঠনের পর প্রায় ৩৫ বছরে শহরের গুরুত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রবাহমান খালের ভরাট ও দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালিরা পাকা স্থাপনা তৈরি করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।ফলে পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

কালীগঞ্জ পৌরসভাট প্রথম শ্রেনী হলে ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় প্রতিটি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা।জলাবদ্ধতা দূরীকরণে কোনো বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে দায়িত্ব এড়িয়ে চলছে পৌর কর্তৃপক্ষ।তাই দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না পৌরবাসীর।টানাবর্ষণেশহরেরমধুগঞ্জশহর,কাঠালবাগানএলাকা,আবাসিকএলাকা,আড়পাড়া,নদীপাড়া,পরামানিকপাড়া,কলেজপাড়া,মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনেসহ প্রতিটি ওয়াডে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে।কয়েক বছর ধরে সামান্য বৃষ্টিতেই এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও পৌর কর্তৃপক্ষেরএ ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ পৌরবাসীর।পৌর এলাকার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন,পৌরসভার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।ড্রেন গুলোর পানি শহরের একমাত্র চিত্রা নদীতে গিয়ে পড়ে।শহরের ব্যবসায়ীরা জানান,বর্ষা মৌসুম এলেই তাদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় ক্রেতা আসেন না। ফলে তাদের বেচাকেনাও কম হয়।কালীগঞ্জ পৌরসভাটি ২০২১ সালের মধ্যে একটি আধূনিক শহর  গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলে ও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আড়পাড়া এলাকার(মধুভাজা মহল্লা)একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও এক হাজার জনসাধারনের বসবাস। কিন্তু ঐ এলাকায় সড়কের উপরে প্রাচীর নির্মান করায় পানি নিস্কাসন হয় না। একটু বৃষ্টি হলে মাসের পর মাস জমে থাকে ও কলেজ পাড়ায় ও পানি জমে থাকে একই ভাবে। অপরদিকে পৌরসভার সামনে আবাসিক এলাকার ৩ ফুটের একটি সড়কের উপরে সিড়ি নির্মান করায় জনসাধারনের চলাচল করতে ও ভ্যান রিকসা চলতে পারে না। এসব বিষয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিলে ও কোন সুরাহা হয়নি। মধুভাজা এলাকার শরিফুজ্জামান রিংকু বলেন, তিনি এলাকার জলাবদ্ধতা ও সড়কের উপর প্রাচীর নির্মানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করলে ও কোন প্রতিকার পায়নি।

যাহার আয়তন ১৫.৮৩ বর্গ কিঃ মিঃ। কালীগঞ্জ পৌরসভা শহরের মধ্যে দিয়ে ঢাকা খুলনা মহাসড়ক এবং মেহেরপুর খুলনা মহাসড়ক বিদ্যমান।৯টি ওয়ার্ডের সম্বন্বয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত।পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তি আছে ১ একর ৪ শতক। খুলনা মেহেরপুর মহাসড়কের পাশে কালীগঞ্জ পৌরসভা অফিস ভবন অবস্থিত।পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা। কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার রয়েছে তিনটি কলেজ,তিনটি বালিকা বিদ্যালয়,১টি সিনিয়র মাদ্রাসা, ২টি দাখিল মাদ্রাসা, কওয়ামী মাদ্রাসা২টি, এফতেদায়ী মাদ্রাসা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬টি,কিন্ডার গার্ডের অন্তত ১২টি,পৌরপাঠাগার এবং বে-সরকারী পাঠাগার, অডিটোরিমায় ২টি একটি পৌরসভার নিজস্ব, পৌরসভার হাটবাজার ২টি এবং বাস টার্মিনাল ১টি,বাসষ্ট্যান্ড ১টি।সরকারী হাসপাতাল ১টি,বে-সরকারী ক্লিনিক-ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে একাধিক,দেশের বৃহত্তম মোবারকগঞ্জ চিনিকল,মোবারকগঞ্জ রেলষ্টেশন,শ্বশান ঘাট ২টি, কবর স্থান ২টি, মন্দির ১৫টি, মসজিদ ৫৪টি। জংলীশাহ পীরের দরগা রয়েছে।

খুলনা বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন বাণিজ্যিক শহর কালীগঞ্জ। ১৮৮৩ সালে এটি থানা সদর দপ্তর হিসেবে ছিল। ১৯৯০ সালের ১৪ মার্চ কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে ক শ্রেনির পৌরসভা হিসাবে মানোন্নয়ন করা হয়। পৌরসভায় মোট ৯টি ওয়ার্ড এবং ১৪টি মৌজা আছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার ভিতর দিয়ে চিত্রা নদী প্রবাহিত। ঢাকা খুলনা মহাসড়ক এবং খুলনা মুজিবনগর মহাসড়ক পৌর শহরের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করেছে। এছাড়া দক্ষিন বঙ্গের ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকল ও মোবারকগঞ্জ রেলষ্টেশন অবস্থিত। পৌরসভার সীমানা উত্তরে ঝিনাইদহ সদর, দক্ষিনে যশোর সদর, পূর্বে শালিখা ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং পশ্চিমে কোর্টচাদপুর উপজেলা।

প্রতিটি ওয়ার্ডর বাসিন্দারা বলেন,শহরে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের নালা রয়েছে। কিন্তু ড্রেন গুলো পরিষ্কার থাকছে না। ময়লা-আবর্জনায় অধিকাংশ আটকে আছে। এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলে মহল্লার রাস্তা ৫/৭ ঘস্টা থেকে ১৫/২০ দিন জলাবদ্ধ থাকে। বৃষ্টি নামলেই মহল্লাবাসীকে হাঁটুপানিতে চলাচল করতে হচ্ছে।ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মহল্লাবাসীকে।পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কালীগঞ্জ পৌরসভায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়ে থাকে। এতে পৌরসভা এলাকার অধিকাংশ বাসাবাড়িতে প্রবেশ করে বৃষ্টির পানি। তলিয়ে যায় অধিকাংশ পাড়া-মহল্লার-রাস্তাঘাট। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। দুর্ভোগ লাঘবে ইতোপূর্বে প্রতিটি মেয়রকে অবগত করা হলে প্রতিশ্রুতি মিললেও দীর্ঘদিনেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। রিকশা চালক মোতালেব মিয়া বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় যাওয়া যায় না। অল্প বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে থাকে। রিকশার মোটরে পানি প্রবেশ করে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।

মধুগঞ্জ এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ি মুশফিকুর রহমান মাহামুদ বলেন,অল্প বৃষ্টিতে পাকা সড়ক তলিয়ে আমার বাসায় পানি প্রবেশ করে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে ও রাস্তা দিয়ে হাটু পানিতে চলাচল করতে হয়।গত কয়েক বছর শুধু উন্নয়নের কথা শুনেছি। কিন্তু সাবেক মেয়ররা কোনো প্রকার ড্রেনের উন্নয়ন মূলক কাজ করেনি। ফলে আমাদের এ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ সব বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্বরত প্রশাসক জনবসতিদের সার্বিক সুবিধা সমাধানের বিষয়ে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন মহল।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে