স্বৈরাচারকে আমরা তাড়াতে পারিনি, আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করেছে: জামায়েত আমির

এফএনএস অনলাইন:
| আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম | প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:২১ এএম
স্বৈরাচারকে আমরা তাড়াতে পারিনি, আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করেছে: জামায়েত আমির

শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমির ডা: শফিকুর রহমান মৌলভীবাজার জেলা সরকারি হাইস্কুল মাঠে জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন, সাড়ে ১৫ বছর দফায় দফায় আমরা অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কিন্ত সেই আন্দোলনের পরিসমাপ্তি আমরা ঘটাতে পারিনি। স্বৈরাচারকে আমড়া তাড়াতে পারিনি, বিদায় করতে পারিনি। আমি গর্বিত আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করেছে। আমি আমাদের সন্তানদেরকে ভালোবাসা উপহার দিলাম। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। জাতির পক্ষ থেকে তাদেরকে স্যালুট জানাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে তারা অসাধ্য সাধন করেছে। এমন সন্তান পেয়ে জাতি গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশ আমড়া তাদের হাতেই তুলে দিবো।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর। তাদের ক্ষোভটা ছিল সাড়ে ১৫টা বছর। এ সময়টায় তারা জাতির ঘাড়ে বসে সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দেশটাকে শ্মশান কিংবা গোরস্তানে পরিণত করেছিল। এরা মাঝে মাঝে বলতো দেশে নাকি অনাবিল শান্তি বিরাজ করছে। আমড়া বলতাম শান্তি তোমরা কায়েম করেছ কবরের মতো। যেখান থেকে হাসি কিংবা কান্নার শব্দ শোনা যায় না। কবরস্থানে কোনো মানুষ থাকে না। হাসি কান্নার আওয়াজ শোনা যায় না। ২৮ অক্টোবর তারা লাশের ওপর নর্দন করেছে। তখনই তারা জানান দিয়েছিল যে ক্ষমতায় এসে খুন-গুমের রাজ্য কায়েম করবে। আমরা সেদিন আমাদের বুকের কান্না বাংলাদেশের মানুষের কাছে হয়ত বা পৌঁছাতে পারিনি। এরপর পেছনে বোঝাপড়া করে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জগন্য সরকারে হাত ধরে করে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তারা জয়লাভ করেছিল। ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসে খুনের নেশা বাস্তবায়নের কর্মসূচি হাতে নেয়।

তিনি আরও যোগ করে বলেন, প্রথমে তারা খুন করে সেনাবাহিনীর চৌকস ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে পিলখানায়। ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি। দুই মাস না যেতেই তারা খুনের রাজত্ব কায়েম করে। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়। বিডিআর বাহিনী ধ্বংস করে সেই বাহিনীর সাড়ে ১৭ হাজার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করলো। সাড়ে আট হাজারকে জেলে দিল। জেলের ভেতর সাড়ে তিন শ’র অধিক মারা গেল। আমাদের গর্বের বাহিনী ধ্বংস হলো। ক্ষমতায় যাওয়ার শেষ সিড়ি হিসেবে এঁদের ব্যবহার করে চক্রান্ত করে ধ্বংস করে দিলো। বাহিনীর নাম বদলে বিজিবি রাখা হয়েছে। আগে নাম ছিল বাংলাদেশ রাইফেলস। আর এখন নাম দিয়েছে বর্ডারের চৌকিদার। লগো বদলিয়েছে, ড্রেস বদলিয়েছে। নাম বদলিয়ে ফেলেছে। কারা হত্যাকারী ছিল জাতিকে জানতে দেয়া হলো না। লুকোচুরি করা হলো। রাতের অন্ধকারে বিদ্যুতের আলো কেড়ে নিয়ে, অন্ধকার করে খুনিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হলো। একটা বিশেষ দেশের প্লেন কেন এসেছিল ঢাকায়। এরপর হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কীভাবে। তার জবাব স্বৈরাচারী সরকাররা না দিলেও একদিন তাদেরকে দিতে হবে। আমড়া ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রতিদেশী দেশকে বলতে চাই-আপনারা শান্তিতে থাকেন। আমাদেরকেও শান্তিতে থাকতে দেন। আপনাদের পাক ঘরে কী পাকাবেন আমড়া জিজ্ঞেস করি না। আমাদের পাক উকি মারার চেষ্টা করবেন না। নিজেরা আয়নায় চেহারা দেখুন। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সবক দিতে হবে না।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে