রাজারহাটে নারীর প্রতি সহিংসতায় বাল্যবিয়ে ক্রমশ: বাড়ছে বিয়ে বিচ্ছেদ

এফএনএস (প্রহলাদ মণ্ডল সৈকত; রাজারহাট, কুড়িগ্রাম) : | প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫১ এএম
রাজারহাটে নারীর প্রতি সহিংসতায় বাল্যবিয়ে ক্রমশ: বাড়ছে বিয়ে বিচ্ছেদ

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বাল্য বিয়ে ক্রমশ: বাড়ছে। বিশেষ করে উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর চরে বাল্য বিয়ের প্রবনতা দিন দিন বেড়েই চলছে। গত এক বছরে রাজারহাট উপজেলায় মোট ২৫ টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করেছে প্রশাসন। ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত রাজারহাট উপজেলায় বাল্য বিয়ে হয় প্রায় ৬/৭শত। এর মধ্যে সবচেয়ে বাল্য বিয়ে হয়েছে ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালে করোনা কালীন সময়ে। এই সময়ে প্রায় ২’শ থেকে আড়াইশ বাল্য বিয়ে হয়েছে বলে বেসরকারি বেশ কিছু সংস্থা দাবী করেছেন। তবে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসন বেসরকারি সংস্থার এ দাবী মানতে রাজি হননি। তবে বাল্যবিবাহ হচ্ছে এটি স্বীকার করেছেন।  অথচ সরকার দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ইউনিয়ন পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষনা করেছে।  সরকার ও এনজিওগুলো রাজারহাট উপজেলারও কয়েকটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামকেও বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষনা করেছেন। তথাপিও বাল্যবিবাহের পরিমাণ আশাতীত হ্রাস করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি পরিবার বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখে। কিন্তু এ জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটান বা জ্ঞানটি সম্পর্কে মূল্যায়ন করে, এমন পরিবারের সংখ্যা এখনো আশাপনুরূপ নয়।

বাংলাদেশে মেয়েদের ১৮ বছর আর ছেলেদের ২১ বছর বৈধবিবাহের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে কোনো ছেলে বা মেয়ের বিয়ে মানে বাল্যবিবাহ। সরকারিভাবে প্রতিনিয়তই বাল্যবিবাহ বন্ধে অভিভাবকদের আহ্বান, শাস্তির ব্যবস্থাসহ সচেতনতার জন্য উঠান বৈঠকসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারিভাবেও বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবুও এ উপজেলা থেকে কোনোভাবেই পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না বাল্যবিবাহ বা বাল্যবিয়ে নামের এ মারাত্মক ব্যাধি।

কারো বিয়ের অনুষ্ঠান মানেই উৎসব। কিন্তু এখন এমন আয়োজন খুব একটা চোখে পড়ে না। এখন এ অঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে যতগুলো বিয়ে হয় তার অর্ধেকের বেশি হয় অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কোথাও কোথাও এমন গোপনে বিয়ে হয় যে, পাড়াপ্রতিবেশীও জানতে পারে না। এমনও দেখা যায়, এক বাড়িতে বিয়ে হচ্ছে অথচ পাশের বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানেই না। 

তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায়, ২০২৪এর জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিনাই ইউনিয়নে ৪০টি বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ হয় ৫টি,  ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৫২টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৪৮টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৪টি, বাল্য বিয়ে ২টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ৩টি,  রাজারহাট ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৪৮টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৪৫টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৩টি, বাল্য বিয়ে ২টি,  বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ২টি, উমর মজিদ  ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৫৪টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৫২টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৪২টি, বাল্য বিয়ে ১টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ২টি, চাকিরপশার ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৫৩টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৪৯টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৪টি, বাল্য বিয়ে ২টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ১টি, নাজিমখান ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৬৯টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৬৫টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৪টি, বাল্য বিয়ে ২টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ৩টি, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৫০টি ,এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৪৫টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ৫টি, বাল্য বিয়ে ২টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ৪টি । গত বছর মোট বিয়ে সম্পন্ন হয় ৩৬৬টি, এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ৩৪৪টি, অনিবন্ধিত বিয়ে ২২টি, বাল্য বিয়ে ১১টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয় ২০টি। ২০২৫সালে বাল্যবিয়ের হার আরও বেশী বলে কয়েকটি বেসরকারি এনজিও জানিয়েছে।  এদিকে বেসরকারি এনজিও আরডিআরএস বাংলাদেশে তথ্যানুযায়ী রাজারহাট উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে গত ৩বছরে গড়ে দেড় শতাধিক বাল্যবিয়ে হয়। এর মধ্যে শতাধিক বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করেছে প্রশাসন।  গত ৫বছরের এক জরিপে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ২থেকে আড়াইশত বিয়ে হয়। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক বিয়ে হয় গোপনে।  এমন ঘটনাও পাওয়া যায়, পঞ্চাশ বা ষাটের দশকে গ্রামাঞ্চলে৬/৭ বছরের কোনো মেয়েশিশুর সঙ্গে ৮/১০ বছরের ছেলেশিশুর বিয়ে পর্যন্ত হয়েছে। যা হাউশের বিয়ে বলে।  উভয়পক্ষের অভিভাবকদের ইচ্ছাতে এ বিয়ে হলেও বিয়ের বর ও কনে জানতই না বিয়ে কী জিনিস। বর্তমান সময়ে ৬/৭ বছর বয়সি কন্যাশিশুর বিয়ের খবর কোথাও খুঁজে পাওয়া না গেলেও অনেক গ্রামে এখনো ১১/১২ বছরের কন্যাশিশুর সঙ্গে ১৫/১৬ বছরের ছেলেশিশুর বিয়ে হওয়ার খবর শোনা যায়। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। কিন্তু চরাঞ্চলে এ গোপনীয়তা থাকে না।  আর এসব বিয়েতে সহায়তা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজপতি ও নিকাহ রেজিষ্টার।  জনপ্রতিনিধি বা ইউনিয়ন তথ্যকর্মীরা মেয়ে বা ছেলের বয়স বাড়িয়ে বা নাম বদলে জন্মনিবন্ধন করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।  

গ্রামাঞ্চলের অনেক অভিভাবক ভাবেন তার পরিবারের মানসম্মানের কথা, ভাবেন তিনি সমাজের অতিদরিদ্র একজন মানুষ। যেদিন তার কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করল সেদিন থেকেই যেন পরিবারের কর্তার মাথায় একটা পাহাড়সম বোঝা চেপে বসল। সেদিন থেকেই চিন্তায় চিন্তায় তার জীবন যেন অন্ধকারময়! মেয়েটা একটু একটু বড় হওয়ার পর অভিভাবকের চিন্তার মাত্রাটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। কোনো মতে, ১১/১২ বছর হলেই পরিবারের কর্তার দিন/রাত দৌড় শুরু হয়ে যায় ঘটকের পেছনে। যেন কোনোমতে বিয়েটা দিতে পারলেই তিনি বেঁচে যান। 

সম্প্রতি বুড়িরহাট দাখিল মাদরাসা, বগুড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রথিমিক বিদ্যালয়, ডাংরারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসা সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, দিন দিন মেয়ে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। এর কারণ জিজ্ঞাস করলেই শিক্ষকরা বলেন, চর থেকে আসা মেয়েদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হলো বাবা-মা অল্প বয়সেই বিয়ে দিচ্ছে মেয়েদের। বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে অভিভাবকদের বুঝালেও তারা বিষয়টি মেনে নিতে পারেন না। নিজেদের মানসম্মান থেকে রক্ষা পেতে তারা এ পথ বেঁচে নেন। এছাড়া আর্থিক দৈনতার কারণেও তারা শিশুদের পড়ালেখা শিখাতে পারেন না। তাই তারা মেয়ের বয়স বিবেচনা না করে শিশুতেই বিয়ে দেন। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তারা এ সুযোগ গ্রহন করেন। এবছরের ঈদুল আযাহা ও ঈদুল ফিতরে চর গতিয়াসাম, চর খিতাবখাঁ, চর বিদ্যানন্দ, চর পাড়ামৌলা ও তৈয়বখাঁর চরে ২০টিরও অধিক বাল্য বিয়ে হয়েছে বলে জানান পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা। বুড়িরহাট দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া আক্তার বলেন, কয়েকদিন আগে বগুড়াপাড়া এলাকার এক বান্ধবীর বিয়ে হয়েছে। সে আর মাদরাসায় আসে না।  চর খিতাবখাঁ গ্রামের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা বেগম বলেন, আমার বয়সি আমার বাড়ির পাশের চাচাতো বোনের বিয়ে দিয়েছে চাচা। লজ্বায় আর মাদরাসায় আসে না।                

যখন কোন শিশুর পুতুল খেলার বয়স, তখনই যদি তাকে সংসার নামক শৃঙ্খলে বন্দি করা হয়, তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি হয়ে থাকে। যখন অভিভাবকরা কোনোমতেই বুঝিয়ে-সুঝিয়েও মেয়েকে তার স্বামীর বাড়ি পাঠাতে পারেন না; তখন সমাজপতিরা এ নিয়ে বিচার-সালিসে বসেন। অথবা মামলা, থানা, আদালত করে সময় কাটাতে হয় অভিভাবকদের। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই তালাকের মাধ্যমে বিয়ের কবর রচিত হয়। আজকাল আমাদের সমাজে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, বর্তমান সময়ে যেসব স্বামী-স্ত্রীর তালাক হচ্ছে তাদের অধিকাংশই বাল্যবিবাহের শিকার বলে জানান রাজারহাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জয়ন্তি রানী।  

বেসরকারি সংস্থা লাইটহাউজ, আরডিআরএস বাংলাদেশ ও রাজারহাট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরসহ উন্নয়ন মূখী সংগঠন বাল্যবিয়ে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক, সভা-সেমিনার করছেন।  বিভিন্ন এলাকার কন্যা শিশু- কিশোরী ও  অভিভাবকদের সভা-সেমিনারের মাধ্যমে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে আলোচনা করে বুঝানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। 

লাইটহাউজ এর স্বেচ্ছাসেবক জিহাদ হাসান বলেন, আমরা বাল্য বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক করেছি। বাল্যবিয়ের পরিনতি কি হয় তা কিশোরী ও অভিভাবকদের বুঝিয়েছি।  

লাইটহাউজ এর উপজেলা কো-অর্ডিনেটর অঞ্জলী রানী বলেন, রাজারহাট উপজেলায় বাল্যবিয়ের প্রবনতা বেশী।   আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বিদ্যানন্দ , ঘড়িয়ালডাঙ্গা, নাজিমখান, উমরমজিদসহ  সব ইউনিয়নে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে অভিভাবকরা যাতে করে শিশুকন্যাদের বাল্যবিয়ে না দেয় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। এমনকি প্রশাসনের সহযোগীতায় কয়েকটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।   

অল্প বয়সে বেশির ভাগ মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ। দেশে মা ও শিশুমৃত্যুর মূল কারণ ১৮ বছরের কম বয়সিদের মা হওয়া। কিশোরী মায়ের মৃত্যুঝুঁকি প্রাপ্তবয়স্ক মায়ের তুলনায় অন্তত চার গুণ বেশি বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এক বেসরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ কিশোরীর বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই। বাল্যবিবাহের কারণে মাতৃমৃত্যু কিংবা শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে শিশু কন্যা মা হওয়ায় কীভাবে শিশুকে পরিচর্যা করবে, সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকে না। এর ফলে মা ও শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে। বাল্যবিবাহের কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা, মাতৃমৃত্যুও ঝুঁকি, অপরিণত গর্ভধারণ, প্রসবকালীন শিশুর মৃত্যুঝুঁকি, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা, নারীশিক্ষার হার হ্রাস, স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি, নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষমতা ও সুযোগ কমে যাওয়াসহ নানা রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। 

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান বলেন, এ উপজেলায় আসা আমার ৭মাস হলো। ৭মাসে ২০/২৫টি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করেছি। এর মধ্যে সবচেয়ে তিস্তার চরে বাল্য বিয়ে বেশি হয়েছে। চরগুলোতে আমি সবচেয়ে বেশী গেছি। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে আমরা প্রশাসন তৎপর রয়েছি। যেকোন সময় যেকোন জায়গা থেকে নিউজ পাওয়া মাত্রই আমরা সেখানে প্রতিরোধের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। মানুষকে সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন অব্যাহত আছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে