দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওঠানামার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার চালু করা স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থার আওতায় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে অকটেন প্রতি লিটার ১২২ টাকা, পেট্রোল ১১৮ টাকা, ডিজেল ১০২ টাকা এবং কেরোসিন ১১৪ টাকায় বিক্রি হবে। অর্থাৎ জুলাই মাসের মতোই আগস্টেও এসব জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকছে।
উল্লেখযোগ্য যে, গত বছরের মার্চ থেকে সরকার প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তেলের মূল্য নির্ধারণ করে আসছে। এর অংশ হিসেবে প্রতি মাসের শুরুতে নতুন মূল্য তালিকা ঘোষণা করা হচ্ছে। এর আগে জুন মাসে কেরোসিনের দাম ১০ টাকা বাড়ানো এবং ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কিছুটা কমানো হয়েছিল। তবে জুলাই মাসে কোনো পরিবর্তন না এনে সেই দামই বহাল রাখা হয়, যা আগস্টেও অপরিবর্তিত থাকছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, দেশে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেলের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি, সেচ, পরিবহন খাত এবং শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় ডিজেল। বাকি চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয় অকটেন, পেট্রোল, কেরোসিন, জেট ফুয়েল ও ফার্নেস অয়েলের মতো অন্যান্য জ্বালানি।
তবে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সঙ্গে সমন্বয় করার সময় জ্বালানি তেলের দাম কখনো বেড়েছে, কখনো অপরিবর্তিত থেকেছে আবার কখনো কিছুটা কমানোও হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালের আগস্টে ভর্তুকি কমিয়ে গড়ে ৪২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল তেলের দাম। কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানো হয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেলেও, অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, শুধু মাসভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ নয়, দীর্ঘমেয়াদে বিকল্প জ্বালানি উৎস এবং ব্যবহার দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়েও এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।