সৈয়দপুরে প্রতিবছর কমছে সোনালী আঁশ পাটের আবাদ

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ১ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম
সৈয়দপুরে প্রতিবছর কমছে সোনালী আঁশ পাটের আবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রতিবছর কমছে সোনালী আঁশ পাটের আবাদ। নানা জটিলতার কারণে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। তার মধ্যে বিরুপ আবহাওয়া,শ্রমিক সংকট,ন্যায্য দাম না পাওয়াসহ নানা কারণে প্রতি বছরই কমছে এ এলাকায় পাটের আবাদ।

এক সময় নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে পাটের আবাদ হত প্রচুর। বাজারে পাটের দাম ভাল থাকায় কৃষকরা পাট আবাদে ঝুকেছিল। কিন্তু আজ সেই পাটের আবাদে যেন ভাটা পড়েছে। 

কামারপুকুর ইউনিয়নের বাগডোকরা কিসামত এলাকার কৃষক মোঃ ফজলুল হক জানান,বাজারে পাটের দাম নেই,সময় মত আকাশের পানি নেই, শ্রমিক সংকট,পাট জাগানোর পুকুর নেই,খাল নেই,ভাল বীজ নেই,ওষুধের দাম বেশি। এমনি অনেক সমস্যার কারণে পাট চাষ আর করি না পাটের পরিবর্তে কৃষকরা এখন ভুট্টা,ধান, তামাক,আলুসহ অন্যান্য ফসলের দিকে বেশি ঝুকে পড়ছে। 

বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন,এক সময় বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল পাট। তাই পাটকে বলা হতো সোনলী আঁশ। ধানের পরেই ছিল পাটের স্থান। অল্প করে হলেও প্রত্যেক কৃষকই পাট আবাদ করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিরূপ আবহাওয়া,ভালো বীজের অভাব,পাট পঁচানোর পানির অভাব, ন্যায্যমূল্য না থাকাসহ নানা অসুবিধার মুখে পড়ে কৃষকরা পাট আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। 

বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, পাটের আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলার অন্যতম কারণ হলো ন্যায্যমূল্যের অভাব। তাছাড়া পাট চাষে বেশি প্রয়োজন হয় শ্রমিকের। কয়েক দফায় পরিশ্রমের পর পাট ঘরে তুলতে হয়। পাট চাষে ব্যয় বেশি হয়ে থাকে। এখন একজন শ্রমিকের মজুরী দিতে হয় দিনে ৬শ টাকা। তারপরও শ্রমিক পাওয়া যায় না।

খাতামধুপুর ইউনিয়নের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন,পাট চাষে শ্রম বেশি দিতে হয়। খরচ বেশি পড়ে। জমি উপযুক্তকরণ থেকে শুরু করে বীজ বপন,নিড়ানি,আগাছা দমন,কীটনাশক প্রয়োগ,কাটা,জাগ দেয়া,সময় মত পানি না পাওয়া,

পাটের আঁশ ছড়ানো,পাট শুকাসহ কয়েকটি দফায় শ্রমিকের প্রয়োজন। এ সকল শ্রমের কথা ভেবে এখন অনেকেই পাট চাষ করেন না। এভাবে যদি প্রতি বছর পাটের আবাদ কমতে থাকে তাহলে এক সময় হারিয়ে যাবে সোনালি আঁশ অর্থকরী ফসল পাট। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়,২০২৩ - ২০২৪ অর্থবছর জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৩৩ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ৮ হাজার ৬৯৫ হেক্টরে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪৬৫ হেক্টর জমিতে কমেছে পাটের আবাদ । প্রতি বছরই নীলফামারীতে কমছে পাটের আবাদ। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে