কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে

আজ ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করবে এনসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৪২ পিএম | প্রকাশ: ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
আজ ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করবে এনসিপি

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন প্রত্যাশা ও ভবিষ্যতের রূপরেখা সামনে রেখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত জনসমাবেশ। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪টায় আয়োজিত এ সমাবেশ থেকে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করবেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

গত এক মাস ধরে দেশব্যাপী পদযাত্রার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, চাওয়া-পাওয়ার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই ইশতেহার। এতে আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, কেমন হতে পারে—তা নিয়েই তুলে ধরা হচ্ছে দলটির রূপরেখা। পাশাপাশি ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন এবং ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের ইঙ্গিত।

জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল থেকেই শুরু হয় মঞ্চ নির্মাণ ও সাউন্ড সিস্টেম স্থাপনসহ প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজ। লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশে অংশ নিতে সকাল থেকেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে থাকেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এক থেকে দেড় লাখ মানুষের জমায়েতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে একই দিনে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘ছাত্র সমাবেশ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়ায় সমাবেশ কেন্দ্রিক কিছুটা উত্তেজনা দেখা দিলেও, এনসিপির পক্ষ থেকে সংঘাত এড়িয়ে চলার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নাহিদ ইসলাম সমাবেশের আগের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলকে শহীদ মিনারের পরিবর্তে শাহবাগে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ধন্যবাদ জানান এবং যানজট ও ভোগান্তির জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

সমাবেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণদের আকাঙ্ক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন প্রয়োজন সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের রূপরেখা। আমাদের ঘোষিত ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ সেই পথ নির্দেশ করবে।” তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পরও রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন আসেনি। এখন সময় সেই কাঠামো ভাঙার।”

নাহিদ ইসলাম এ সময় দাবি জানান, সরকার যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কথা জানিয়েছে, তা যেন সংবিধানে স্থান পায় এবং ৫ আগস্টের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’-এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “বেশিরভাগ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, কিছু কিছু বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আছে। তবে সবদিক পর্যালোচনা করে বাস্তবায়ন পদ্ধতির নিশ্চয়তা পেলে এনসিপি সই করবে। এর অবশ্যই আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচন ও সংসদ গঠন ‘জুলাই সনদ’-এর ভিত্তিতেই হতে হবে। সংস্কারের কাজও শুরু হতে হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় থেকেই। নির্বাচিত সংসদের হাতে এসব ছেড়ে দিলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।”

এনসিপি আহ্বায়ক আরও বলেন, “আমরা চাই না কেউ ‘জুলাই’র নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করুক। এমন কার্যকলাপে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, সামান্তা শারমিন, আব্দুল হান্নান মাসউদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সবশেষে, আয়োজকরা জানান—এটাই জুলাই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি; আর এই ঘোষণাই হতে যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশের যাত্রার সূচনা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে