সেনবাগের ১০টি সরকারি খাল দখলদারের কবলে, জলাবদ্ধতা চরমে

এফএনএস (মোঃ জাহাঙ্গীর আলম; সেনবাগ, নোয়াখালী) : | প্রকাশ: ৩ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম
সেনবাগের ১০টি সরকারি খাল দখলদারের কবলে, জলাবদ্ধতা চরমে

সেনবাগ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার ১০টি সরকারি খাল অবৈধ দখলদাররা জবর দখল করে ঘরবাড়ি ,দোকান পাট নির্মান ও খালে বাঁধ দিয়ে রাস্তা ঘাট নির্মান করার কারনের উপজেলার ৫০ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধাতা দেখা দিয়েছে। এতে করে এবছর ৬ হাজার ৩শ, ২৫ হেক্টর জমিনে আমনের চাষাবাদে নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চিয়তা। এছাড়াও অতি বৃষ্ঠির কারণে সেনবাগে ২০টি লেয়ার মোরগ খামারের মোরগ লোকসান দিয়ে বিক্রি এবং  বহু  বয়লার মুরগীর খামারে পানি ডুকে মুরগী মার যাবার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে  দখল ,দুষন ও জলাবদ্ধতায় বিপযস্ত হয়েছে পড়েছে সেনবাগে প্রায় আড়াই লক্ষাধীক অধিবাসী। 

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এক সময়ের সেনবাগের ছোট বড় অসংখ্য শ্রোতস্বিনি শাখা খালগুলো মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযোগ হওয়া নোয়াখালী খাল ও ফেনীর ছিলোনিয়ার ছোট ফেনী নদীর সঙ্গে।  ভারি বৃষ্টিপাত হলে সেনবাগের হাজনী খাল হইতে কাজীরহাট খাল, সেনবাগ রাস্তার মাথা হইতে সেনবাগ ডাকবাংলা পর্যন্ত সেনবাগ খাল, সেনবাগ শেখ সুফি খাল হইতে বদুগাজী খাল, কানকিরহাট হইতে ছাতারপাইয়া খাল, মইশাই হইতে কুমিল্লা নাঙ্গলকোট খাল, ছাতারাপাইয়া বাজার হইতে তেমুহনী খাল, ছাতারপাইয়া বাজার হইতে চৌমুহনী পযন্ত খাল, ছিলোনিয়া হাজীরহাট খাল হইতে গাজীহাট নিজ সেনবাগ খাল, চন্দেরহাট হইতে সাহেবেরহাট খাল, সাত বাড়িয়া হইতে জিরুয়া বাবুপু শ্রীপুর খাল খালগুলো সেনবাগের ইয়ারপুর হইতে ছমির মুন্সিরহাট খালগুলো এক শ্রেনীর প্রভাবশালী লোক অবৈধ ভাবে দখল করে বাড়িঘর,দোকান ঘরএবং খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে দেওয়ার কারনে পুরো উপজেলা জুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়েছে।এলাকাবাসীর দাবী দখল হওয়া খালগুলো থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ,খালগুলো পরিস্কার ও শুস্কমৌষুমে খালগুলো কাটার দাবী জানান।

সেনবাগের শায়েস্তানগর গ্রামের শতবর্শী মোঃ তাজুল ইসলাম জানান,তিনি দেখেছেন চৌমুহনী থেকে ফেনী অভিমুখি সেনবাগের এই খালটি দিয়ে এক সময় বড়বড় নৌকা স্বাম্পান নৌকা চলাচর করতো ওই নৌকা দিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল আনা নেওয়া করতো। নৌকা ও স্বাম্পানের মাঝি মাল্লাদের গুল দড়ি টানার দৃশ্য এখনো তার চোখে ভাসছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, বিগত ২৪এর আশ্মিক বণ্যায় পুরো সেনবাগ সহ নোয়াখালী অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে যায়।

 ইয়ারপুর গ্রামের খন্দকার রুহুল আমিন বলেন ,বিগত দুই বছর পূর্বে ফেনী নোয়াখালী ফোর লেইন সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হলে রাস্তা প্রসস্তত করার জন্য অধিকাংশ বাজার এলাকায় মাটি পেলে খাল ভরাট করে সড়ক নির্মান করা হয়। এছাড়াও বাজারগুলোতে ময়লা ফেলার নিদিষ্ঠ কোন জায়গা না থাকায় ব্যবসাযীরা তাদের ময়লা গুলো খালে ফেলার কারনে খালগুলো ভলাট হয়ে গেছে এতে করে কচুরি পানা ও ঘাঁস জন্মানোর করনে পানি প্রবাহ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়।

 সেনবাগের মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল খায়ের বলেন, কল্যান্দী বাজার থেকে সেবারহাট বাজার পর্যন্ত ২০টি অধিক বাঁধ রয়েছে। এছাড়াও ফেনী-নোয়াাখালী খালের সেবারহাট শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যাালয় সংলগ্ন খালটি বন্ধ করে ভবন নির্মানের কারনে ফেনী ছিলোনিয়া অভিমুখি পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এ কারনে  জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

সেনবাগ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, জুলাইয়ের শুরুতে বীজতলা প্রস্তুত ও বীজ বপনের সময় এবং আগষ্টে শুরুতে জমিনে রোপা আমনের চারা রোপনের সময়। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের বৃষ্ঠির কারনে বীজতলা গুলো ২/৩ফুট পানির নিছে তলিয়ে রয়েছে। অনেক কৃষকের ধানের বীজের চারা অঙ্করুম হলেও বীজ তলা পানির নিছে তলিয়ে থাকায় তা নষ্ঠ হয়ে গেছে। এতে করে ১হাজার ১০ হেক্টর জমিনের বীজতলা সম্পূর্ন নষ্ঠ হয়ে গেছে। 

এ দিকে সেনবাগ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত মোঃ আসাদুজ্জান সফি জানান, ভারি বর্ষণের কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হওয়ায় সেনবাগ উপজেলার অন্তত ২০টি  লেয়ার মোরগ খামারি তাদের ডিম পাড়া মোরগগুলো লোকসানে বিক্রি করে দিয়েছে। এ ছাড়াও বয়লার মুরগির খামারে পানি প্রবেশ করায় বহু মোরগ মারা গেছে এতে করে খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েছে

সেনবাগ উপজেলা প্রশাসন গত এক সপ্তাহে  ভ্রাম্যমানর আদালত পরিচালনা করে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলে এখনো অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে। এলাকাবাসী দাবী অভিলম্ব খালের ওপর অভৈধ স্থাপনা উচ্ছে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান।

এব্যাপারে যোগাযোগ করলে সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন ও সেনবাগ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমিঘ মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম অবৈধ দখল এবং খালে বাঁধ থাকার কথা নিশ্চিত করে জানান,তারা অবৈধ দখল দারের একটি তালিকা তৈয়ার করেছেন খুব শিগ্রই উচ্ছেদ অভিযান পরিচানা করে খালগুলো দখল মুক্ত করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে