নতুন অর্থবছরের সূচনাতেই দেশের অর্থনীতিতে এক টানা প্রবাহ যোগ করলেন প্রবাসীরা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তারা দেশে পাঠিয়েছেন ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব)। রোববার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের তুলনায় এবার রেমিট্যান্সে ২৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। গত বছরের ওই মাসে দেশে এসেছিল ১৯১ কোটি ডলার। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে প্রবাসীরা সামাজিক মাধ্যমে আহ্বান জানিয়ে রেমিট্যান্স কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার পর থেকে রেমিট্যান্স ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই রেমিট্যান্স এসেছে সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে, ফলে তা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ, ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং সেবার মানোন্নয়ন এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে, ২০২৫ সালের জুন মাসে দেশে এসেছে ২৮২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার—যা এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে এই অঙ্ক ছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এই প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা, ডলারের সরবরাহে স্বস্তি, এবং মুদ্রা বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে এটি বৈদেশিক বাণিজ্যে আস্থা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা আরও জোরদার করছে।