‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ উপলক্ষে আট জোড়া ট্রেন ভাড়া করল সরকার, খরচ ৩০ লাখের বেশী

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:০৫ পিএম | প্রকাশ: ৩ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ উপলক্ষে আট জোড়া ট্রেন ভাড়া করল সরকার, খরচ ৩০ লাখের বেশী

‘জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ’ উপলক্ষে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো ছাত্র-জনতাকে রাজধানীতে আনতে আট জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুপুরের মধ্যেই এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাবে এবং কর্মসূচি শেষে রাতে তাদের গন্তব্যে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। বিশেষ ট্রেনগুলোর ভাড়া ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যা বহন করবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরের আবেদনের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নেয়। রেলওয়ের কর্মকর্তারা আবেদন অনুসারে ট্রেন চলাচলের সময়সূচি তৈরি করেছেন। চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, ফরিদপুর, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসব ট্রেন ঢাকা আসবে। এর মধ্যে রংপুর থেকে রাত ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায় যাত্রা শুরু করবে একটি ১৪ কোচবিশিষ্ট ট্রেন, যার ভাড়া সাড়ে ১০ লাখ টাকা। অন্য ট্রেনগুলো ৫ আগস্ট সকাল ও দুপুরের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবে।

প্রতিটি ট্রেনের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ও আসনসংখ্যাও স্পষ্ট করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম থেকে ১৬ কোচবিশিষ্ট ট্রেনের ভাড়া ৭ লাখ টাকার বেশি, সিলেট থেকে ১১ কোচের ট্রেনের ভাড়া ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা, আর রাজশাহী থেকে ৭ কোচের ট্রেনের ভাড়া ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ভাঙা থেকে আসা ট্রেনগুলোর ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম হলেও আসনসংখ্যা অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ।

অনুষ্ঠান শেষে দূরবর্তী এলাকা থেকে আগত ট্রেনগুলো রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরবে। এসব ট্রেন পরিচালনায় রেল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সূচি অনুসরণ করছে বলে নিশ্চিত করেছে রেলওয়ে।

‘জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ’ হবে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

এ ধরনের ট্রেন ভাড়া নতুন নয়। অতীতেও রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসমূহ কর্মসূচি উপলক্ষে ট্রেন ভাড়া করেছে। যেমন—আওয়ামী লীগ, বিএনপির ছাত্রদল এবং জামায়াতে ইসলামী তাদের নিজ নিজ রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য ট্রেন ভাড়া নিয়েছে। সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে, চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদল ১ হাজার ১২৬ আসনের ২০ কোচবিশিষ্ট ট্রেন ভাড়া করে শাহবাগ সমাবেশে অংশ নেয়। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর ১৯ জুলাইয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে চারটি ট্রেনের জন্য ভাড়া গুনতে হয় প্রায় ৩২ লাখ টাকা।

রেলপথ মন্ত্রণালয় বলছে, রাজনৈতিক দল কিংবা সরকারি সংস্থা যেই হোক, নির্ধারিত আবেদনপত্রের ভিত্তিতে ট্রেন ভাড়া দেওয়া হয় এবং এর জন্য স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি গুণতে হয়। এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, “রাজনৈতিক দলের আবেদনে ট্রেন ভাড়া দেওয়া হয়, এখন সরকারের একটি মন্ত্রণালয় চেয়েছে। আমরা টাকা পাচ্ছি, তাই ট্রেন ভাড়া দিয়েছি।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে