জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নতুন তারিখের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিনে জবানবন্দিতে আন্দোলনে পা হারানো আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট’, বলেছিল শেখ হাসিনা।
ইমরান আরও বলেন, ‘এর ফলে ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা গুরুতর আহতরা কোনো চিকিৎসা পাননি। এমনকি অন্য হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদের।’
এর আগে, সকাল ৯টায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গত রোববার এ মামলায় সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য শুরু হয়। সূচনা বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষ শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে।
শেখ হাসিনা, কামাল ছাড়াও মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আসামি হলেও বর্তমান সময়ে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
অভিযোগ করা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ১৪০০ জন ছাত্র ও জনতাকে হত্যা এবং হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৪ জুলাই ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা, হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ, রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে আনাসসহ ছয় শিক্ষার্থী হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানো।
অভিযোগের মধ্যে প্ররোচনা, উসকানি, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা এবং ষড়যন্ত্রের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ রয়েছে অন্তর্ভুক্ত ।