নিশান এনজিও শত কোটি টাকা নিয়ে পালানোর চেষ্টা

এফএনএস (মোঃ আলাউদ্দিন রনি; মাধবপুর, হবিগঞ্জ) :
: | আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম : | প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:৪৭ এএম
নিশান এনজিও শত কোটি টাকা নিয়ে পালানোর চেষ্টা

হবিগঞ্জের মাধবপুরের তেলিয়াপাড়ায় নিশান এনজিও শত কোটি টাকা নিয়ে পলায়নে চেষ্টা করলে জনতা কর্মকর্তাদের তেলিয়াপাড়া অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালিন সংসদ সদস্য এড.আবু জাহের আর্শিবাদ পৃষ্ঠ ,নিশানের চেয়ারম্যান বেলাল ২০ বছর আগে প্রতিভা নামে একটি এনজিওর কর্মচারী ছিল। তার শ্যালক জালাল উদ্দিন সেনা বাহিনী থেকে বরখাস্ত ছিল। মাসুদ নামে এক কর্মচারী বেকা``র ছিল। তারা মিলে হবিগঞ্জের মাধবপুরের তেলিয়াপাড়ায় নিশান নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে সাধারণ মানুষকে প্রতি লাখে মাসে  ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দিয়ে হবিগঞ্জ জেলা সহ মাধবপুর এলাকার শত শত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে। বিগত সরকারের আমলে প্রশাসনসহ ওই এমপির প্রভাব দেখিয়ে এসব অনিয়ম করে গেছে অবলিলায়। ব্যাংক বা ডাকঘরে আমানত জমা রাখলে প্রতি লাখে মাসে মুনাফা দেয় ভ্যাট বাদে ৭শ কি ৮ শ টাকা। কিন্তু নিশান এনজিওর অতি মুনাফার ফাঁদে পড়ে মাধবপুর এলাকার সব পেশার মানুষ কোটি কোটি টাকা জমা করেছে। কিন্তু আমানত রাখার নিশানের সরকারি কোন বৈধ অনুমোদন নেই। অনেক কালো টাকার মালিক সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিতে গোপনে কোটি টাকা জমা করেছে। মাধবপুর সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা সোলায়মান মজুমদার বলেন,নিশান পরিবেশ, স্বাস্থ্য সমবায় সমিতির অনুমোদন নিয়ে গত ১৫ বছর গোপনে মাধবপুর, চুনারুঘাট ও শ্রীমঙ্গলে কর্ম এলাকার বাইরে গিয়ে এনজিওর আদলে ঋন বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন। তখন নিশানের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেই। কিন্তু এরপর নিশান গত কয়েক বছর ধরে অতি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকার মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে। কিন্তু আমানত সংগ্রহ করতে পারে একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তারা শুরুতেই বেআইনি কাজ শুরু করে। বেশি মুনাফা দেখে শত শত লোক জমি বিক্রি,ব্যবসার টাকা সহ নিজের সহায় সম্বল বিক্রি করে নিশানে জমা করেছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান,নিশানের চেয়ারম্যান বেলাল ২০ বছর আগে প্রতিভা নামে একটি এনজিওর কর্মচারী ছিল। তার শ্যালক জালাল উদ্দিন সেনা বাহিনী থেকে বরখাস্ত ছিল।মাসুদ নামে এক কর্মচারী বেকার ছিল।এখন বেলাল, জালাল, মাসুদ,আমেনা ও তাদের ছেলেদের নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।যাদের বৈধ আয়ের কোন উৎস নেই। তাদের সবার রয়েছে নামিদামি গাড়ি। মাধবপুরে সবকটি ব্যাংক থেকে তারা কোটি কোটি টাকা লেনদেন করেছে। জনগনের টাকা তারা নিয়ে দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে।স্থানীয়দের দাবি বিগত ১৮ বছর হবিগঞ্জ শহরের প্রভাবশালী ওই এমপির ছত্রছায়ায় বেলাল  জালালরা মানুষের টাকা হাতিয়ে নিযেছে। প্রতিটি নির্বাচনে বেলাল নিশানের পক্ষ থেকে টাকা দিয়েছে। বেলালের মুল বাড়ি ওই এমপির আসনে চরহামুয়া গ্রামে। এখন আমানতকারিরা পড়েছে মহা চিন্তায়। টাকা ফেরত পেতে প্রতিদিন তেলিয়াপাড়া অফিসে লোকজন জড়ো হয়ে দেনদরবার করছে কিন্তু টাকা ফেরত দেয়না। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিশানের লোকজন বিদেশে পালিয়ে যেতে ষড়যন্ত্র করে। ইতিমধ্যে তাদের আশ্রয়দাতা বিদেশে পালিয়ে গেছে। জনতার তোপের মুখে পড়ে শনিবার রাতে নিশানের এমডি জালাল উদ্দিন বলেন,তারা মানুষের কাছ থেকে ১৫০ কোটি টাকা নিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যবসায় তারা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারনে তারা টাকা পাচ্ছেনা। তাই তারা আমানতদারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছেনা। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান- কয়েক বছর আগে সমবায় অফিস থেকে নিশান নিবন্ধন নেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আমাদের অফিসে কোন যোগাযোগ করেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাসেম জানান এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে